আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

স্বপ্নভঙ্গ তিন পরিবারে শোকের ছায়া

সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২৭ জনকে শনাক্ত করে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৭ জনকে এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এই ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ নেয়া মাত্র ২২ বছর বয়সী আফজাল হোসেন, লরিচালক মো. হারুন ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ার ফাইটার মো. শাকিল তরফদার ও। তাদের মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতে যাওয়া আফজাল হোসেন : 

সীতাকুণ্ডের আফজাল হোসেনের স্বপ্ন ছিলো বিদেশ যাওয়ার। তার জন্য পাসপোর্ট-মেডিকেল সবই করাও হয়েছিল। ভিসার জন্য অগ্রিম কিছু টাকাও জমা দেয় পরিবার। আর বাকি টাকা জোগাড় করতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ নেন আফজাল। কিন্তু বিদেশ যাওয়া তার আর হলো না। গেলো শনিবার রাতে বিস্ফোরণে মাত্র ২২ বছর বয়সে নিভে যায় আফজালের জীবনের আলো। ঘাতক বিএম ডিপো, ধূলায় মিশিয়ে দেয় তার পরিবারের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষাকে। এই ঘটনার মাত্র ১০ মাস আগে মারা যান তার বাবা সোলায়মান সওদাগর। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই আবারও শোকের ছায়া নেমে আসলো এই পরিবারে। 

লরিচালক মো. হারুন : 

একই ঘটনায় প্রাণ হারান চট্টগ্রাম ইপিজেড নারিকেল তলার ৫১ বছর বয়সী লরিচালক মো. হারুন। যিনি ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। প্রতিদিনের মত সেদিনও হারুন গাড়ি নিয়ে সেখানে যান মালামাল লোড করতে। ভয়াবহ সেই বিস্ফোরণে প্রাণ হারান হারুন। তার গাড়ি ও মোবাইল ফোন রয়ে গেছে নিখুঁত, শুধু না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি।

ফায়ার ফাইটার মো. শাকিল তরফদার :

খুলনা বটিয়াঘাটার সুখদারা গ্রামের সাত্তার তরফদার ও জেসমিন বেগম দম্পতির ছেলে শাকিল তরফদার। সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান ছিলেন তিনি। কনটেইনার ডিপোয় আগুন নেভাতে গিয়ে মৃত্যু হয় তার। স্বজন হারানোর বেদনায় শোকে পাথর পুরো পরিবার।

উল্লেখ্য, গেলো শনিবার রাত পৌনে ১১ টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। চমেক হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন অগ্নিদগ্ধ শতাধিক শ্রমিক-কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন