নারীদের দিয়ে পাতা হতো ফাঁদ, এরপর...
নারীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে বিত্তবানদের কাছ থেকে নেয়া হতো আপত্তিকর ছবি। সেই আপত্তিকর ছবি ব্যবহার করে বিত্তবানদের করা হতো অপহরণ। ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। ঢাকায় অপহরণের ১০ দিন পর ভুক্তভোগীকে উদ্ধার এবং ৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর দুর্ধর্ষ এক চক্রের সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শুক্রবার (৮ মার্চ) রাতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে লিটন মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীকে।
লিটনকে ১০ দিন আগে অপহরণ করেছিল একটি চক্র। এসময় হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে; যারা এই অপহরণের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। চারজনের তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই নারীকে। তারা সম্পর্কে মা মেয়ে। মূলত চক্রটির নারী সদস্যদের দিয়েই ফাঁদ পাতা হয় অপহরণের। ভুক্তভোগী লিটনকেও এক নারী সদস্যকে দিয়ে অপহরণ করা হয়েছিল।
তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ এই সিন্ডিকেটটি পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য তাদের ব্যবহার করা মোবাইল ফেলে দেয় ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরের কোনো এলাকায়। সিন্ডিকেটটি পরিচালনা করেন জুয়েল রানা নামের একজন। নিজের শ্বশুড়কে হত্যা করার মধ্যদিয়ে অপরাধীর খাতায় নাম লেখানো এই জুয়েলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ১৮টি।
পুলিশ বলছে, ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ব্যবসার কথা বলে নারীদের দিয়ে অপহরণ করে চক্রটি। জুয়েল রানা নিজেই ৩০টি অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মুক্তিপণের টাকা আদায় করেন তারা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, জুয়েল রানার বাড়ি নবীনগর। ওই এলাকায় তিনি আন্ডারওয়ার্ল্ডের একজন গডফাদার হিসেবে পরিচিত। তিনি তার প্রথম শ্বশুরকে হত্যা করে পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে অপরাধ জগতে নাম লিখান।
হারুন অর রশিদ বলেন, এবার লিটন মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীকে তিনি অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন, যেটা চাওয়া হয় ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। এর মধ্যে ৪ লাখ টাকার সমপরিমাণ ডলার পাঠিয়ে দেয়া হয় দুবাইয়ে রিফাত নামে একজনের কাছে। আর জুয়েল রানা নিয়ে নেন ৬ লাখ টাকা।
এর আগেও এই চক্রের সদস্যরা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান।