জাতীয়

কানেকটিভিটি জোরদার করতে একমত ঢাকা-থিম্ফু

বাংলাদেশ ও ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার সংহতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সড়ক, রেল ও পানিপথে কানেক্টিভিটি দৃঢ় করতে একমত হয়েছে।  সার্কের অন্যতম সদস্য এই রাষ্ট্র মনে করে অর্থনৈতিক সংহতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সোমবার (২৫ মার্চ) ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের ঢাকা সফর উপলক্ষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। এর আগে, এদিন বিকালে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা চুক্তি ও একটি নবায়ন চুক্তি সই হয়।

চুক্তিগুলো হচ্ছে-থিম্পুতে একটি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করবে বাংলাদেশ এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সহযোগিতা দেবে। দ্বিতীয়টি হলো কুড়িগ্রামে ভুটানের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা।

তৃতীয়টি হচ্ছে, বাংলাদেশে ডিরেক্টরেট অব ন্যাশনাল কনজুমারস রাইটস প্রটেকশন এবং ভুটানের কম্পিটিশন অ্যান্ড কনজুমারস অ্যাফেয়ার্স অথরিটির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক চুক্তিটি নবায়ন করা হয়েছে।

এছাড়া, প্রতিবছর ভুটানের ২২ জন শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে স্কলারশিপে পড়তে আসেন এবং এ সংখ্যাকে ৩০-এ উন্নীত করা হয়েছে। বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমি ভুটানে একটি ডিপ্লোমেটিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট খোলার জন্য সহায়তা প্রদান করবে এবং ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণের জন্য দুটি আসন ভুটানের কূটনীতিকদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। কৃষি খাতে সহযোগিতার অংশ হিসেবে ৭ থেকে ১০ জন ভুটানের কর্মকর্তাকে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সরকারের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে তৈরি কিছু ট্যাব ও ল্যাপটপ উপহার দেওয়া হয়েছে ভুটানকে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং উভয় দেশ আঞ্চলিক সংস্থা, যেমন- সার্ক ও বিমসটেকে এ বিষয়ে কাজ করবে।

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ভুটান বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং রাজা জিগমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সফর করবেন। ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ভুটানের গেলেফু শহর থেকে মাত্র ১৯০ কিলোমিটার দূরে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বৃহত্তর সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।

বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অন্যতম সহযোগিতা খাত এবং এ খাতে উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ, ভুটান ও ভারতের মধ্যে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হয়।

উভয় দেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে এবং মসৃণ উত্তরণের জন্য উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে সম্মত হয়।

প্রসঙ্গত, রাজা চার দিনের সফরে সোমবার সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিমানবন্দরে রাজাকে অভ্যর্থনা জানান।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন