দেশজুড়ে

চিকিৎসার খরচ চালাতে না পেরে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে অভাবের সংসার। তার ওপর কয়েক বছর ধরে ভুগছিলেন হার্টের রোগসহ নানা অসুখে। নুন আনতে যেখানে পান্তা ফুরানোর মত অবস্থা, সেখানে বছরের পর বছর চিকিৎসার খরচ চালানোর চাপ আর নিতে পারছিলেন না তিনি। আর্থিক কষ্টের সাথে যোগ হয়েছিল শারীরিক ব্যথা। এসব সহ্য করতে না পেরে অবশেষে নিজের পেটে নিজেই ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন রংপুর থেকে জীবিকার সন্ধানে রাজধানীতে আসা - ৪৫ বছর বয়সী রিকশাচালক জয়নাল আবেদীন।

রাজধানীর হাতিরঝিলের মধুবাগ এলাকায় ভাড়া করা বাসায় মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নিজের পেটে নিজেই ছুরি চালান জয়নাল। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত পৌনে ৯টায় মারা যান তিনি।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে।

নিহতের স্ত্রী মঞ্জিলা বেগম জানান, আমার স্বামী রিকশা চালাতেন। চার বছর আগে হার্টের রোগ ধরা পড়ে তার। আমি বাসা বাড়িতে কাজ করি। আমার এক মেয়ে এক ছেলে। মেয়েটি একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে। ছেলেটির বয়স পাঁচ বছর। আমরা গরিব মানুষ। হার্টের রোগের চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা পয়সা লাগে। আমার স্বামী এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে কোনও কাজই করতে পারতেন না।

তিনি বলেন, আমাদের মা-মেয়ের সামান্য এই টাকায় সংসার চলত। অভাবের সংসারে খুব কষ্ট করে দিন চলে আমাদের। স্বামীর হার্টের রোগের চিকিৎসার জন্য এত টাকা পয়সা আমাদের নেই। তাই কখনও আমরা তার জন্য ওষুধ কিনে দিতে পারতাম, আবার অনেক সময় পারতাম না।

তিনি আরও জানান, আজ সন্ধ্যার পর শরীরের ব্যথায় আমার স্বামী কাতর হয়ে পড়ছিলেন। কিন্তু টাকা না থাকায় তার জন্য ওষুধ আনতে পারিনি। এই কষ্টে আমার স্বামী নিজের পেটে চাকু চালিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পরে আমরা এই অবস্থা দেখে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসি। পরে এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

জয়নাল আবেদীন রংপুরের পীরগঞ্জ থানার হাসানপুর গ্রামের মৃত মোজামিয়ার ছেলে। বর্তমানে মগবাজার মধুবাগের ৩ নম্বর গলির বাসায় ভাড়া থাকতেন।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন