আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সেই সার্ভেয়ার আতিকের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৩ লাখ টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কক্সবাজারের স্পেশাল জজ আদালত।

আজ সোমবার (৪ জুলাই) দুপুর দেড়টায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল।

আদালত সূত্র জানায়, ২৩ লাখ টাকাসহ বিমানবন্দরে আটক হন সার্ভেয়ার আতিকুর রহমান। টাকার উৎসের বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে আদালত আসামির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদক সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (ডিডি) মনিরুল ইসলাম বলেন, রোববার (৩ জুলাই) বিকেলে দুদক সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন (নম্বর-১/২০২২)। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলাটি করা হয়।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, শুক্রবার (১ জুলাই) ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটকের পর ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ সার্ভেয়ার আতিককে কক্সবাজার সদর থানায় সোপর্দ করে জেলা প্রশাসন। সরকারি কর্মচারী বিধিমতে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজের একটি অভিযোগ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করে দুদকে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। নিয়মমতে, দুদকই সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলাতে সোমবার আতিককে শোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।

অন্যদিকে আতিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে উল্লেখ করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আল আমিন পারভেজ বলেন, ‘থানায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে তা শুরু হয়েছে। তিনি কীভাবে, কোথা থেকে এত টাকা পেলেন এবং তা ঢাকায় কেন নিয়ে গেছেন সব বিষয়ে উৎঘাটন করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’

কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন আতিকুর রহমান। তার ব্যাগ স্ক্যান করলে ব্যাগের ভেতর বিপুল পরিমাণ টাকার স্তূপ দেখা যায়। তাকে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যরা ব্যাগসহ আটক করে বিশেষ কক্ষে বসিয়ে রাখেন। এর পাঁচ মিনিটের মাথায় রহস্যজনক কারণে পৌনে ১০টার দিকে বিমানে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।

ঘণ্টাখানেক পর ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে তল্লাশিতে ব্যাগে টাকার উপস্থিতি পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে আতিকুর রহমানের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার আরেকটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়।

বিমানবন্দর থেকে আতিকুর রহমানকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুক্রবার রাতে কক্সবাজার মডেল থানায় তাকে সোপর্দ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

আতিকুর রহমানসহ তিনজন সার্ভেয়ার কক্সবাজারের মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুস বাবদ আতিকুর রহমান ওই অর্থ নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কক্সবাজারে সরকারের ৩ লাখ কোটি টাকার ৭২টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রচুর পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। অধিগ্রহণ কাজে সহযোগিতা করা সার্ভেয়ারদের মধ্যে এর আগেও বেশ কয়েকজন নগদ কোটি টাকাসহ দুদক এবং র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন