নিউইয়র্কে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযান, ফিলিস্তিনপন্থী কয়েক ডজন শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
নিউইয়র্ক শহরের বেসরকারি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রশাসনিক ভবনে আটকে থাকা কয়েক ডজন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। পাশাপাশি আইভি লিগ স্কুলটিতে অস্থায়ীভাবে তৈরি প্রতিবাদকারীদের ক্যাম্প ভেঙ্গে ফেলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পুলিশের অভিযান শুরু হয়। বিপুল সংখ্যক হেলমেটধারী পুলিশ এই অভিযানে অংশ নেয়। অভিযান চালানোর তিন ঘণ্টার মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন এবং তাদের ক্যাম্পগুলো ভেঙ্গে ফেলে পুলিশ। পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, অভিযানের সময় ফিলিস্তিনপন্থী কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
আপার ম্যানহাটনের বিক্ষোভকারীদের প্রধান ক্যাম্পে পুলিশ প্রথম অভিযান শুরু করে। এই জায়গাটি হলো সমাবেশের অন্যতম কেন্দ্র বিন্দু। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে শুরু হওয়া ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ এখান থেকেই পরবর্তীতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পসে পুলিশ প্রবেশ করার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনোচ শফিক একটি চিঠি প্রকাশ করেন। ওই চিঠিতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আনা, ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং বিক্ষোভকারীরা যাতে আর প্রতিবাদ ক্যাম্প তৈরি করতে না পারে তার জন্য আগামী ১৭ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করার জন্য পুলিশের প্রতি অহবান জানান।
নিউইয়র্ক পুলিশের সদস্যরা যখন একটি মইয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় তলার জানালা দিয়ে প্রশাসনিক ভবন হ্যামিল্টন হলে প্রবেশ করছিলেন তখন হলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা "লজ্জা, লজ্জা" বলে চিৎকার করে পুলিশকে ব্যঙ্গ করেন।
বিক্ষোভকারীরা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তিনটি দাবি করেছিলো- ইসরায়েল সরকারকে সমর্থনকারী কোম্পানিগুলোকে সমর্থন দেওয়া থেকে সরে আসতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং বিক্ষোভের জন্য শৃঙ্খলাবদ্ধ ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শন করা।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট শফিক চলতি সপ্তাহে বলেছেন- কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েল সরকারের অর্থ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না। পরিবর্তে, তিনি গাজায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বিনিয়োগ করার এবং কলম্বিয়ার সরাসরি বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলোকে আরও স্বচ্ছ করার প্রস্তাব দেন।
মঙ্গলবার প্রকাশিত তার চিঠিতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট শফিক আরও বলেছেন, হ্যামিল্টন হল দখলকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাংচুর করেছে এবং অনুপ্রবেশ করছিল। প্রবেশাধিকার না থাকলেও হ্যামিলটন হলটিতে শিবিরের বিক্ষোভকারীরা অনুপ্রবেশ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অগেই সতর্ক করেছিলো- প্রশাসনিক ভবন হ্যামিলটন হল দখলকারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হতে পারে।