চামড়া ছাড়িয়ে ৮০ টুকরো করা হয় এমপি আজীমের দেহ
ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশি এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পর তার মরদেহ থেকে চামড়া ছাড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। এরপর তার মরদেহকে ৮০ টুকরায় ভাগ করা হয়। পরে তা খালসহ বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়া হয়।
সম্প্রতি কসাই জিহাদ হাওলাদার জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য জানা যায় বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি।
সিআইডির আশঙ্কা— ইতিমধ্যে হয়তো আনোয়ারুলের খণ্ডিত দেহ বিভিন্ন জলজ প্রাণির পেটে চলে গেছে।
গেলো ২২ মে আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যা মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। এরপর বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন আসামি ‘কসাই’ জিহাদকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। শুক্রবার জিহাদকে উত্তর ২৪-পরগনার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১২ দিনের রিমান্ড দেন।
মূলত আনারকে হত্যার জন্য ভারতের মুম্বাই থেকে ‘কসাই’ খ্যাত জিহাদ হাওলাদারকে কলকাতায় আনা হয়। কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর আনোয়ারুলকে হত্যার পর কীভাবে তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে দেয়া হয়, তার রোমহর্ষক বর্ণনা দেয় সে।
কসাই জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি জানিয়েছে, এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার পর তার মরদেহের ৮০টি টুকরো করেন কসাই জিহাদ। এরপর সেই অংশগুলো ফেলা হয় কলকাতার উপকণ্ঠে অবস্থিত ভাঙড়ের কৃষ্ণমাটি এলাকার বাগজোলাখালির বিভিন্ন স্থানে।
সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন— ২৪ বছর বয়সী জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে বাস করতেন। তার বাড়ি খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহীন দুই মাস আগে জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন।
তারা আরও জানান, শাহীনের নির্দেশে জিহাদসহ চার বাংলাদেশি মিলে আনারকে ওই ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে হলুদ ছিটিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে পথে কেউ ধরলে বলতে পারে, বাজার থেকে কেনা। উদ্দেশ্য ছিল, এভাবে গুম করা হবে, যাতে কেউ কোনো দিন তার অস্তিত্ব না পায়।
গেলো ১৩ মে আমানউল্লাহ, জিহাদ ও সিয়াম দুটি স্যুটকেসে এমপির দেহের টুকরাগুলো ভরে পাবলিক টয়লেটের সামনে দাঁড়ানো একটি গাড়িতে ওঠেন। সেই গাড়ির চালকও তেমন কিছু জানতেন না। পরে সিয়াম ও জিহাদকে স্যুটকেসসহ বিদায় করে আমানউল্লাহ আবার ওই ফ্ল্যাটে চলে যান। পরদিন ওই তিনজন বাকি টুকরাগুলো পলিথিনে পেঁচিয়ে ব্যাগে ভরে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যান।
টিআর/