আন্তর্জাতিক

বিয়ের পর স্বামী জানলেন, স্ত্রী আসলে পুরুষ

প্রেমের সম্পর্ক  যখন বিয়েতে পরিণত হয় তখন শুরু হয় সুখের দিন। কিন্তু হায়! এক স্বামী তার বিয়ের কয়েকদিন পর জানলেন তার স্ত্রী আসলে পুরুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে-অপরের পরিচয়। ধীরে ধীরে পরিচয় পরিণত হয় ভালোবাসায়। এরপর এক বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর অবশেষে হলো বিয়ে।

বিয়ের দিন কয়েকের মাথায় স্বামী জানলেন, তার স্ত্রী আসলে একজন পুরুষ। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী স্বামী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায়।

সোমবার (২৭ মে)  হংকং-ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ান এক ব্যক্তি সম্প্রতি বিয়ে করেছেন এবং এরপরই নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট অনুসারে, ২৬ বছর বয়সী ওই স্বামী জানতে পারেন, ভালোবেসে বিয়ে করলেও এর ১২ দিনের মাথায় তিনি জানতে পারেন, তার স্ত্রী আদিন্দা কানজা আসলে নারীর ছদ্মবেশে থাকা একজন পুরুষ।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, ভুক্তভোগী ওই স্বামীর নাম এ কে (ছদ্মনাম)। তিনি ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের নারিঙ্গুল অঞ্চলের বাসিন্দা। ২০২৩ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৬ বছর বয়সী আদিন্দা কানজার সাথে তার পরিচয় হয়।

পরে দুজনেই দ্রুত সামনা-সামনি দেখা করার পরিকল্পনা করেন। এ কে বলেন, কানজা সর্বদা ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পোশাক পরতেন যার ফলে তাদের দেখা করার সময় তার পুরো মুখ ঢেকে থাকত এবং সে নিজেকে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান বলে দাবি করত।

একে বলেন, কানজার নেকাব পরার বিষয়টি তার খারাপ লাগেনি এবং এটিকে তার ইসলামের প্রতি ‘ওই তরুণীর’ ভক্তির চিহ্ন হিসেবেই দেখেছিলেন তিনি।

এর প্রায় এক বছর তারা দুজনেই তাদের বিয়ের পরিকল্পনা শুরু করেন। তবে কানজা সেসময় জানান, তার বিয়েতে কেউ থাকতে পারবে না, কারণ বিয়েতে যোগ দেয়ার জন্য তার পরিবারের কোনও সদস্যই নেই। এরপর তারা গেলো ১২ এপ্রিল একে-এর বাড়িতে বিয়ে করেন।

কানজা এমনকি বিয়ের দিন যৌতুক হিসাবে ৫ গ্রাম (প্রায় আধা ভরি) স্বর্ণও সঙ্গে এনেছিল, তবে এই দম্পতি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিবাহের নিবন্ধন করেননি।

Indonesian man discovers wife he married after year-long romance was male scammer https://t.co/Z2B6sjNG4u

— South China Morning Post (@SCMPNews) May 27, 2024

যাইহোক, বিয়ের পরেও আদিন্দা ক্রমাগত তার স্বামীর কাছ থেকে নিজের মুখ লুকিয়ে রাখতে থাকে এবং গ্রামে স্বামীর পরিবার এবং বন্ধুদের সাথেও মেলামেশা করতে অস্বীকার করে। এমনকি ঋতুচক্রের মতো মাসিক অসুস্থ বোধ করার কারণ উল্লেখসহ নানা অজুহাতে স্বামীর ঘনিষ্ঠতা এড়ানোর চেষ্টাও চালাতে থাকেন তিনি।

দিনের পর দিন নববিবাহিতা স্ত্রীর এমন সন্দেহজনক আচরণের পর, একে তার স্ত্রীর বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি জানতে পারেন, আদিন্দার বাবা-মা এখনও জীবিত আছেন এবং তারা তার সন্তানের বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানেন না।

একে আরও আশ্চর্য হন যখন জানতে পারেন, তার স্ত্রী আদিন্দা আসলে একজন পুরুষ এবং তার প্রকৃত নাম ‘ইএসএইচ’, যিনি ২০২০ সাল থেকে নারীদের মতো পোশাক পরছেন।

পুলিশের তদন্তের সময় ইএসএইচ নামের ওই যুবক জানিয়েছে, সে তার ‘স্বামীর’ পরিবারের সম্পদ চুরি করার জন্য এই বিয়ে করেছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ তার কণ্ঠস্বরকে ‘নারীর মতো’ বলে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে, ‘নারী হিসেবে’ সে সত্যিই ভালো অভিনয় করেছে।

পুলিশ বলেছে, ‘আপনি যদি তাদের বিয়ের ছবি দেখেন, তাহলে দেখবেন- আদিন্দাকে দেখতে একেবারে সত্যিকারের নারীর মতো দেখাচ্ছে। তার বেশ কোমল ও মৃদু কণ্ঠস্বরও রয়েছে, তাই তাকে নারী বলে সন্দেহ করার কোনও কারণ ছিল না।’

এদিকে স্থানীয় আইনের অধীনে আদিন্দা প্রতারণার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন এবং এই অভিযোগে তার চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন