রেমালের অজুহাতে বাড়লো সবজির দাম
গরমের পরে এবার তীব্র ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাড়লো সবজির দাম। তবে চাল,ডাল ও আটা-ময়দার দাম আগের মতোই রয়েছে। সামান্য কমেছে মুরগির দাম।
শুক্রবার (৩১ মে) রাজধানী ও এর আশেপাশের বাজার ঘুরে এ তথ্য জানতে পারে গণমাধ্যম।
বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৪০ টাকা ও কহি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ধুন্দল ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, লতি ৬০-৮০ টাকা, আলু ৫৫-৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও কাঁকরোল ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে সবজির দাম। মূলত ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় বাজারে কিছুটা সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে বেড়ে গেছে দাম।
তবে দাম কমেছে কাঁচা মরিচের। খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা; কোনো কোনো বাজারে অবশ্য এখনও ২০০ টাকা। আর পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন,আমদানির ভয়ে দাম কমাচ্ছেন আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা, যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারেও। আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমে আসবে।
এদিকে মুরগির মাংসের দাম সামান্য কমলেও চড়া ডিমের বাজার। খুচরায় এ ধরনের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা দরে। হালি হিসাবে (৪টি) কিনতে গেলে গুনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এ ছাড়া সাদা রঙের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।
ডিমের দর বাড়ার জন্য করপোরেটদের দায়ী করছেন ছোট খামারিরা।
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার জানান, বড় প্রতিষ্ঠান ও ঢাকার বড় পাইকাররা সিন্ডিকেট করে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করছে। এতে ছোট খামারিরা হুমকির মুখে পড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি রসুন ২০০-২২০ টাকা এবং আমদানি করা চায়না রসুন ২২০- ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বা বিদেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায়।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আলুর দাম, তিন মাসের ব্যবধানে বর্তমানে সাধারণ ডায়মন্ড আলুর দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকা। অলি-গলির দোকানপাটে কোথাও আবার এই আলুই বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজিতে। এছাড়া,লাল গোল আলু ৭০ টাকা এবং জাম আলু খ্যাত লাল ও লম্বা আলুর কেজি ৮০ টাকা ছাড়িয়েছে।
মোহাম্মদপুর কাচাবাজারে আসা আল আমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যেরই দাম ঊর্ধ্বমুখী। যে কারণে মাসের খাবার খরচ বেড়েছে প্রায় অর্ধেক। কিন্তু আ আয় তো বাড়েনি। দুইটি টিউশনি করিয়ে আগে যা পেতাম, এখনও তাই পাই। খরচ কমানোর জন্য আগে অন্যান্য সবজির চেয়ে আলুটাই বেশি খেতেন। এখন দেখা যাচ্ছে অন্য সবকিছুর চেয়ে আলুর দামই বেশি, তাহলে মানুষ এখন খাবে কী?
এদিকে বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৬০০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। এছাড়া আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা ও আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে ইলিশের দাম। এ মুহূর্তে প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা। যদিও ৮০০-৯০০ গ্রাম ইলিশ ১৫০০ টাকা ও ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায়।
স্থিতিশীল মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার ২০০-২২০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৫০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা আর খাসি মাংস ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।