রহস্যে ঘেরা বাজেটের লাল ব্রিফকেস
আজ সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এরই মধ্যে লাল ব্রিফকেস নিয়ে সংসদ ভবনে পৌঁছেছেন তিনি। এটি তার প্রথম বাজেট।
বৃহস্পতিবার (০৬ জুন) বেলা ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট পেশ করবেন তিনি।
প্রতিবছরই বাজেট এলেই আলোচনায় আসে অর্থমন্ত্রীর হাতে থাকা লাল ব্রিফকেস। কিন্তু লাল ব্রিফকেসেই কেন বহন করতে হয় বাজেটের নথি? দেশ স্মার্ট হয়েছে, তবু লাল ব্রিফকেসের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।
ব্রিফকেসের যাত্রাটা শুরু হয় উনিশ শতকে যুক্তরাজ্যে। ১৮৬০ সালে ব্রিটেনের বাজেটপ্রধান উইলিয়াম ই গ্ল্যাডস্টোন লাল একটি স্যুটকেসে করে বাজেটসংক্রান্ত নথি নিয়ে আসেন। সেই স্যুটকেসের ওপর সোনা দিয়ে রানির মুখের আদলের ছাপ দেয়া ছিল।
বাজেট শব্দটি এসেছে পুরোনো ফরাসি শব্দ ‘ব্যুজেট (বোগেট)’ থেকে। ব্যুজেটের অর্থ হলো, থলে বা ব্যাগ। অতীতে থলেতে ভরে দেশের আয়-ব্যয়ের হিসাব আইনসভা বা সংসদে আনা হতো বলে একে ‘বাজেট’ নামে অভিহিত করা হয়।
রেওয়াজ অনুযায়ী ‘লাল ব্রিফকেস’ হাতে বাজেট উত্থাপন করতে সংসদে ঢোকেন অর্থমন্ত্রী। তবে এই ব্রিফকেসের রং লাল ছিল না সব সময়। সময়ের সঙ্গে তা বদলেছে। আসলে রং যা-ই হোক না কেন, এই ব্রিফকেসকেই ধরা হয় বাজেটের প্রতীক।
ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ২০২১ সালে ব্রিফকেসের প্রথা ভেঙে লাল মোড়কে মোড়ানো ট্যাবলেট নিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন। কাগজপত্র ছাড়া ট্যাবলেট থেকে বাজেট বক্তৃতা পাঠ করেন তিনি।
ব্রিফকেসের ব্যবহার প্রসঙ্গে আকবর আলি খানের ‘বাংলাদেশে বাজেট : অর্থনীতি ও রাজনীতি’ বইয়ে ল্লেখ রয়েছে যে, শিল্পবিপ্লবের পর ইংল্যান্ডের অর্থনীতি অনেক বড় হয়ে যায়। বাজেটবিষয়ক প্রস্তাবগুলো শুধু একটা মানিব্যাগে সংকুলান করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে জায়গা পায় ব্রিফকেস রীতি। তবে ব্রিফকেস ব্যবহারের আরেকটি কারণ হলো বাজেটে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর গোপনীয়তা রক্ষা।
উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত এ বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা; যা আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।
এবারের বাজেটের প্রতিপাদ্যা ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য করছাড় সুবিধা পেতে পারে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্র।