আন্তর্জাতিক

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে ‘কালো জাদু’ করার অভিযোগ

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর ওপর ‘কালো জাদু’ প্রয়োগের অভিযোগে দেশটির একজন মন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার মন্ত্রীর নাম ফাতিমা শামনাজ আলি সালিম। তিনি দেশটির পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। গেলো বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এ গ্রেপ্তরের কথা জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রোববার (৩০ জুন) আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম পাকিস্তান অবজার্ভার’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালদ্বীপের পুলিশ জানায়, ফাতিমা শামনাজ আলি সালিমসহ আরও দুই কর্মকর্তাকে গেলো রোববার (২৩ জুন) রাজধানীর মালে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কর্মকর্তারা জানান, শামনাজকে এক সপ্তাহের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তবে তার গ্রেপ্তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ।

এদিকে মালদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সানের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ওপর কালো জাদু প্রয়োগ করার কারণে ফাতিমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ এই প্রতিবেদনের সত্যতা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে মালদ্বীপ অন্যতম। সে জন্য ফাতিমার মন্ত্রণালয়টি দেশটির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ দেশটি কার্যত বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন জাতিসংঘের পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালদ্বীপে জাদুবিদ্যার চর্চা কোনো ফৌজদারি অপরাধ নয়। তবে ইসলামি আইনে দেশটিতে জাদুবিদ্যাচর্চার দায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড হওয়ার বিধান রয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে মালদ্বীপের মানাধু অঞ্চলে কালো জাদু প্রয়োগের অভিযোগে তিন প্রতিবেশীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৬২ বছর বয়সি এক নারী। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারী জাদুবিদ্যা প্রয়োগ করেছিলেন এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ভারত মহাসাগরের মাঝে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে মালদ্বীপ। দেশটি বিশ্বের ব্যস্ততম পূর্ব-পশ্চিম শিপিং লেনগুলোর একটি। ফলে ভূরাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে দিল্লি ও বেইজিং নিজ নিজ বলয় প্রতিষ্ঠা করতে চায় দেশটিতে।

গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মুহাম্মদ মুইজ্জু। তিনি রাজধানী মালের মেয়র ছিলেন। তার জন্ম ১৯৭৮ সালের ১৫ জুন। যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১২ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। পুলিশ ও সামরিক বিদ্রোহের পর মালদ্বীপের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার পতনের পর গঠিত ঐক্য সরকারের আবাসনমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন