দোকানীর মাথা বিহিন লাশসহ মূলহোতা আটক
মাত্র ২০ হাজার টাকার জন্য জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল সাতক্ষীরার চা দোকানী ইয়াছিন আলীকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আটক হওয়া হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী জাকির হোসেন।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে র্যাব-৬ সাতক্ষীরা আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-৬ খুলনার অধিনায়ক লে: কর্নেল মোস্তাক মোর্শেদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গ্রেপ্তার হওয়া জাকির হোসেন খুলনা শহরের বাচ্চু শেখের পুত্র। সাতক্ষীরা শহরের গড়েরকান্দা এলাকায় বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিল।
র্যাব কর্মকর্তা লে: কর্নেল মোস্তাক মোর্শেদ জানান, ভিকটিম খুনির পূর্ব ব্যবসায়িক অংশীদার। ব্যবসার সুবাদে খুনি জাকির ভিকটিমের কাছে ২০ হাজার টাকা পেতো। কয়েকবার তাগিদ দেয়া স্বত্বেও টাকা পরিশোধ করতে পারেনি চা’দোকানে ইয়াছিন।
এ কারণে অভিযুক্ত জাকির হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে গেলো ৩০ আগস্ট রাত ৯টার দিকে বাইপাস সড়কে ঘর উঠানোর কাজ করার কথা বলে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে নিয়ে আসে ইয়াছিন আলীকে। রাত গভীর হলে সুযোগ বুঝে ইয়াছিনের গলায় দা দিয়ে কোপ দেয়। ইয়াছিন আলী মাটিতে পড়ে গেলে তখন এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ইয়াছিনের শরীর হতে মস্তক আলাদা করে অভিযুক্ত জাকির হোসেন।
পরবর্তীতে মাথাবিহীন মৃত দেহ টেনে রাস্তার পাশে পানিতে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ১ কিলোমিটার দুরে ব্রিজের নিচে ডোবার মধ্যে মাথা তার (ভিক্টিমের) পরিধানের লুঙ্গিতে পেঁচিয়ে বস্তাবন্দী করে পানিতে ডুবিয়ে দেয়। পরের দিন ৩১ আগস্ট এলাকার লোকজন রাস্তায় পাশে পানিতে লাশ পড়ে আছে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী বাদী হয়ে সাতক্ষীরা জেলার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
র্যাবে একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে ইয়াছিন আলীর হত্যাকারী সাতক্ষীরা জেলার সদর থানাধীন আলীপুর এলাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে অভিযান পরিচালনা করে হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে মাথাবিহীন লাশের মাথা ও ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
র্যাব কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে জাকিরকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা শহরতলীর বাইপাস সড়ক সংলগ্ন ঘের থেকে গেলো বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে ইয়াসিন আলী নামের এক চা বিক্রেতার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পৌরসভার সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা এবং সদর উপজেলা পরিষদের সামনে চা বিক্রি করতেন। ওই দিন রাতে নিহতের স্ত্রী আকলিমা খাতুন বাদি হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এসি