রানের পাহাড় টপকে ভারতের বিপক্ষে জয় পেলো অস্ট্রেলিয়া
ভারতের রানের পাহাড় টপকে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০৮ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। টিম ইন্ডিয়ার রানের পাহাড় দাপটের সাথে টপকে ৪ উইকেটের দুর্দান্ত জয় অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বিশ^ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
মোহালিতে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে নেমে দলের জন্য ভালো সূচনা করতে পারেননি ভারতের দুই ওপেনার লোকেশ রাহুল ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ১৬ বলে ২১ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১টি করে চার ছক্কা মারা রোহিতকে ব্যক্তিগত ১১ রানে বিদায় করেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড। এই ইনিংস দিয়ে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৭২ ছক্কায় নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিলকে স্পর্শ করলেন রোহিত।
তিন নম্বরে নেমে ৭ বল খেলে ২ রানে বিদায় নেন বিরাট কোহলি। ৩৫ রানে ২ উইকেট হারানোয় চাপে পড়ে ভারত। এ অবস্থায় থেকে কাউন্টার অ্যাটাক করেন রাহুল ও চার নম্বরে নামা সূর্যকুমার যাদব। দু’জনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ১২তম ওভারেই শতরান স্পর্শ করে ভারত।
৩২ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রাহুল। হ্যাজেলউডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৫৫ রানে থামেন তিনি। তার ৩৫ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো। সূর্যকুমারের সাথে ৪২ বলে ৬৮ রান তুলেন রাহুল।
হাফ-সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৪৬ রানে আউট হন সূর্য। ২৫ বল খেলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন তিনি।
দুই সেট ব্যাটার রাহুল-সূর্যের বিদায়ে পর অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের একাই শাসন করেন হার্ডিক পান্ডিয়া। ২৫ বলে ৭১ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার পেসার ক্যামেরুন গ্রিনের করা ইনিংসের শেষ ওভারের শেষ তিন বলে তিনটি ছক্কা মেরে ভারতকে বড় সংগ্রহ পাইয়ে দেন পান্ডিয়া। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২০৮ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সংক্ষিপ্ত ভার্সনে এটিই ভারতের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ । ৩০ বলে ৭টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন পান্ডিয়া। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান পান্ডিয়ার। অস্ট্রেলিয়ার নাথান এলিস ৩ ও হ্যাজেলউড ২টি উইকেট নেন।
২০৯ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই ছক্কা মারেন অসি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। বোলার ছিলেন ভুবেনশ্বর কুমার। আর উমেশ যাদবের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম চার বলে বাউন্ডারি মারেন আরেক ওপেনার গ্রিন। ভুবেনশ^রের করা তৃতীয় ওভারে তিনটি চার মারেন ফিঞ্চ।
চতুর্থ ওভারে আক্রমনে এসে ফিঞ্চকে ব্যক্তিগত ২২ রানে বোল্ড করেন স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। দলীয় ৩৯ রানে ফিঞ্চ ফিরলেও অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়েছেন অপর প্রান্তে থাকা গ্রিন। ভারতীয় বোলারদের উপর এক প্রকার তান্ডব চালিয়েছেন তিনি।
একবার জীবন পেয়ে ২৬ বলে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন গ্রিন। গ্রিনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ১০ ওভারেই ১০৯ রানের সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া। ১১তম ওভারে প্যাটেলের প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৩০ বলে ৬১ রান করেন গ্রিন। দ্বিতীয় উইকেটে গ্রিন-স্মিথ ৪০ বলে ৭০ রান তুলেন।
দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে গ্রিনের আউটের পর চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ১৪৫ রানে পৌঁছাতে পঞ্চম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১২তম ওভারে ডাবল উইকেট নেন পেসার উমেশ যাদব। স্মিথ ৩৫, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১ ও জশ ইংলিশ ১৭ রান করেন।
এমন অবস্থায় ম্যাচ জিততে শেষ ৩৫ বলে জিততে ৬৪ রান দরকার পড়ে অস্ট্রেলিয়ার। ষষ্ঠ উইকেটে ৩০ বলে ৬২ রান তুলে অস্ট্রেলিয়ার জয়কে সহজ করেন ম্যাথু ওয়েড ও দলের নতুন মুখ টিম ডেভিড।
প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে নামা ডেভিড ১৮ রানে থামেন। তখন জয় থেকে ২ রান দূরে অসিরা। ৪ বল হাতে রেখেই দলের জয় নিশ্চিত করেন ওয়েড ও কামিন্স। টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান চেজ করে জয়ের রেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়া।
৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ২১ বলে অপরাজিত ৪৫ রান করেন ওয়েড। ভারতের প্যাটেল ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন গ্রিন।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর নাগপুরে হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি।