আর্কাইভ থেকে করোনা ভাইরাস

ভারতে বাড়ছে সংক্রমণ; করোনার ডাবল মিউট্যান্ট ধরন ১৮ রাজ্যে

ভারতে করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রামক ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ শনাক্ত হলো দেশটিতে। বুধবার প্রায় সাড়ে ৫৩ হাজার জনের শরীরে মিলেছে প্রাণঘাতি ভাইরাস। একই সময়ে মারা গেছে ২৪৯ জন। এ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শুধু মহারাষ্ট্র রাজ্যেই করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে ২০৬ জনের শরীরে। ব্রিটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনগুলো ছড়িয়ে পড়েছে ১৮ রাজ্যে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ডবল মিউট্যান্ট ধরনটি দুইবার রূপ পাল্টাতে সক্ষম। ভারতে প্রবেশ করা আন্তর্জাতিক যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষা ও ভাইরাসের জিনগত গঠন বিশ্লেষণ করে দেখার পর নতুন ধরনের ভাইরাসে উদ্বেগের কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মহারাষ্ট্রেই প্রায় ৩২ হাজার মানুষের শরীরে শনাক্ত হয়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। যা মহামারির এক বছরে রেকর্ড। বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে প্রতিদিনের সংক্রমণ পাঁচ হাজারের ওপর। এ কারণে আসন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান হোলির সব কর্মসূচি স্থগিত করেছে প্রশাসন। একইসঙ্গে লোকসমাগম হয় এমন স্থানগুলোয় গণহারে কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে। শিষ্টাচার লঙ্ঘন করলে লকডাউন জারির হুমকি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

মহারাষ্ট্র থেকে পাওয়া নমুনা পরীক্ষায় জানা গেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ই৪৮৪কিউ এবং এল ৪৫২আর মিউটেশনের সঙ্গে নমুনার ভগ্নাংশ বেড়েছে। এ ধরনের মিউটেশন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ায়। তবে ১৫-২০ ভাগ নমুনার ক্ষেত্রে এ ধরনের মিউটেশন পাওয়া গেছে।

কেরালা রাজ্যেও ভয়াবহ দ্রুতগতিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। রাজ্যের ১৪টি জেলায় দুই হাজার ৩২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্য থেকে ১২৩টি নমুনায় এন৪৪০কে ধরনের ভাইরাসের প্রমাণ মিলেছে। এই ধরনের ভাইরাসও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে রোগাক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ায়।

অন্ধ্র প্রদেশে ৩৩ ভাগ নমুনা পরীক্ষায় নতুন ধরনের করোনার উপস্থিতি আগেই মিলেছে। তেলেঙ্গানাতে ১০৪টি নমুনার মধ্যে ৫৩টিতে এই ধরনের ভাইরাস পাওয়া গেছে।

ভারতে শেষবার গেলো অক্টোবরে দিনে, ৫৪ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে মিলেছিলো প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। দেশটিতে মোট সংক্রমিত এক কোটি ১৮ লাখের কাছাকাছি। করোনায় মোট মারা গেছে এক লাখ ষাট হাজারের বেশি মানুষ।

এদিকে, আগামী এক এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের টিকা দেওয়া শুরু করবে ভারত। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন