মুক্তির অপেক্ষায় আজমেরী হক বাঁধনের দুই সিনেমা
গেলো বছর নাটক বা সিনেমা-কোথাও দেখা যায়নি ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে। তবে গেলো জুলাই-আগস্ট শুরু হওয়া বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে রাজপথে থেকে ছাত্রদের সাহস জুগিয়েছেন এ অভিনেত্রী।
আন্দোলনপরবর্তী অভিনয়শিল্পী সংঘের সংস্কারের জন্য লড়াই করেছেন তিনি। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নতুন কোনো কাজে যুক্ত হতে পারেননি এ অভিনেত্রী। এছাড়া বেশকিছু কাজ রয়েছে অসমাপ্ত, যা এ বছর শেষ করবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
আজমেরী হক বাঁধন সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার অভিনীত দুটি সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। এগুলো চলতি বছর মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান বাঁধন। অভিনেত্রী বলেন, “আমার অভিনীত বেশ কিছু কাজ শেষ করে রেখেছি। এগুলো এ বছর রিলিজ হবে। তার মধ্যে দুটি সিনেমা রয়েছে। একটি হলো রেজওয়ান রহমান সুমিতের ‘মাস্টার’। অন্যটি সানি সানোয়ারের ‘এশা মার্ডার’।
মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘এশা মার্ডার’ সিনেমা প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, এ সিনেমায় আমি প্রথমবার পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে একজন নারী অভিনয় করেছে।
যা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে। আশা করছি দুটি সিনেমাই দর্শকরা পছন্দ করবেন।
বর্তমান রাজনীতি ও দেশ সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে এ অভিনেত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আন্দোলনপরবর্তী যে সংস্কারের পথে হাঁটছি তা যেন সঠিকভাবে হয়। এটাই নতুন বছরে প্রত্যাশা।
একটি সুষ্ঠু, স্বাভাবিক নির্বাচন যেন হয়। যেখানে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটের মাধ্যমে তারা যেন নিজেদের পছন্দের সরকার নির্বাচন করতে পারে। যে সরকার আমাদের এ দেশটাকে সুন্দরভাবে পরিচালিত করবে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে যাবে।‘
প্রসঙ্গত, লাক্স তারকা থেকে রুপালি পর্দা, তারপর বিশ্ব মঞ্চ ও বলিউডে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তবে তার এই চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না।
কারণ পেশাগত নানা সংকটের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও সংগ্রামটা একাই করতে হয়েছে তাকে।
২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় ২য় রানার্স-আপ হওয়ার পর তিনি ঢাকাই বিনোদন জগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং চম্পার সাথে ২০১০ সালে ‘নিঝুম ওরনি’ নামে একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন । তিনি টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেন।
বলিউডের 'হায়দার' খ্যাত নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের 'খুফিয়া' নামের আলোচিত সিনেমাটিতে দেখা যায় আজমেরি হক বাঁধনকে। ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর নেটফ্লিক্সের প্রযোজনায় ছবিটি মুক্তি পায়।
২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া রেহানা মরিয়ম নূর ৭৪তম কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ‘আন সার্টেন রিগার্ড’ বিভাগে প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে তার প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বাঁধন সাফল্য অর্জন করেন ।
তিনি সেরা অভিনেত্রীর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার , ‘সেরা অভিনেত্রী’ বিভাগে ১৪তম এশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস (এপিএসএ) এবং এই ছবির জন্য নিউ ট্যালেন্ট বিভাগে হংকং এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল পুরস্কার জিতেছেন।
ডেন্টাল সার্জারিতে স্নাতক ডিগ্রিধারী আজমেরী হক বাঁধন ২০১০ সালে পূর্ব পরিচিত মাশরুর সিদ্দিকী সনেটকে বিয়ে করেন। প্রায় চার বছর সংসার করার পর ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ হয় তাদের।
বাঁধন-সনেট দম্পতির মিশেল আমানী সায়রা নামে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের পর মেয়েকে একাই বড় করেছেন এই অভিনেত্রী।
এমআর//