কানাডা-মেক্সিকোর জন্য ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়, চীনের জন্য নয়
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেক্সিকোর পর এবার কানাডার ওপর আরোপিত শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) তিনি এই ঘোষণা দেন। তবে চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হচ্ছে।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার থেকে কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করার কথা ছিল। তবে, শুল্ক কার্যকরের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেন। এই আলোচনার পর উভয় পক্ষ শুল্ক স্থগিত করার বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছান।
জানা গেছে, অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার রোধে সীমান্ত এলাকায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ওপর শুল্ক ৩০ দিনের জন্য সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং ফেনটানিলের মতো ক্ষতিকর মাদক পাচার বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ভালো আলোচনার পর কানাডা উত্তর সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় ১০ হাজারে সেনা মোতায়েন করবে। মাদক পাচারকারীদের সন্ত্রাসীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ফেনটানিলের পাচার রোধে একজন ফেনটানিল জার নিয়োগ করা হবে। অর্থ পাচারও বন্ধ করা হবে।
এর আগে, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের শর্তে মেক্সিকোর ওপর আরোপিত শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে তিনি বলেন, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবামের সঙ্গে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে ১০ হাজার সেনা পাঠাতে রাজি হয়েছেন শেইনবাম। মেক্সিকোতে শুল্ক আরোপ স্থগিত করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্ম সোশ্যাল ট্রুথে জানিয়েছেন, ‘একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার দায়িত্ব হলো সব আমেরিকাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আমি তাই করছি। প্রাথমিক ফলাফলে আমি খুবই সন্তুষ্ট।’
ক্লাউডিয়া শেইনবাম জানান, আলোচনার পর ট্রাম্প শুল্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে তিনি এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একটি শর্ত যুক্ত করেছেন। শর্ত অনুযায়ী, মেক্সিকোকে অবৈধ মাদক পাচার রোধ এবং সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ প্রবেশ ঠেকানো যায়। ইতিমধ্যে, এই শর্তগুলি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া শুরু হয়েছে।
চীনের ওপর শুল্ক বহাল
চীনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখনও কোনো সমঝোতা না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১২টা থেকে বেইজিংয়ের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প এ সপ্তাহের শেষের দিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলবেন।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘ আমি আশা করি চীন আমাদের দেশে ফেন্টানল পাঠানো বন্ধ করবে। যদি তারা তা না করে, তবে শুল্ক আরও অনেক বেশি বাড়ানো হবে।’
চীন ফেন্টানল ইস্যুকে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং এই বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-তে চ্যালেঞ্জ জানানোসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। একইসঙ্গে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উন্মুক্ত রেখেছে।
এসি//