লাইফস্টাইল

ছোট ঘরকে যেভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখবেন

ঘর মানেই সবার কাছে শান্তির নীড়। তাই সকলেরই ইচ্ছা থাকে এই শান্তির নীড়টাকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা। কিন্তু এখনকার ফ্ল্যাটগুলো এত ছোট হয় যে এতে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ধরানোই মুশকিল হয়ে যায়। সেখানে নিজের মতো করে ঘর সাজানো মুশকিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। আপনি চাইলে কিছু কৌশল খাটিয়ে এই ছোট ঘরকেই কিছুটা বড় দেখাতে পারবেন। আর সাজিয়ে নিতে পারেন মনের মতো করে।

ছোট ঘরকে যেভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখবেন

১. দেয়ালের রঙ

প্রথমেই আসি দেয়ালের রঙ প্রসঙ্গে। ছোট ঘরের জন্য সঠিক দেয়ালের রঙ বাছাই করাটা খুবই জরুরী। ছোট ঘরের দেয়ালের জন্য অবশ্যই কোন হালকা রঙ বা লাইট শেইড বাছাই করুন। সাদা, অফ হোয়াইট, হালকা হলুদ, বেবি পিংক, হালকা নীল ইত্যাদি কালারগুলো ছোট ঘরে ভালো মানাবে। ডিপ কালার বা একেকটা ওয়ালে একেক কালার দিলে স্পেস ছোট দেখাবে।

২. ঘরের পর্দা

এবার আসি পর্দা প্রসঙ্গে। ঘরের পর্দা অবশ্যই দেয়ালের রঙের সাথে মিলিয়ে নিবেন। দেয়ালের রঙ এর সাথে মিল রেখে অথবা দেয়ালের রঙ এর এক বা দুই শেইড গাড় পর্দা ব্যবহার করুন। তবে কখনোই বিপরীত রঙ-এর পর্দা ব্যবহার করবেন না, এতে ঘর আরো ছোট দেখাবে। চাইলে হালকা কালারের প্রিন্টেড কাপড়ও সিলেক্ট করতে পারেন।

৩. ফার্নিচার সিলেকশন

খুব বেশি কারুকাজ করা বা ভিক্টোরিয়া স্টাইলের আসবাব এড়িয়ে চলুন। হালকা বা স্লিক ডিজাইনের ফার্নিচার ব্যবহার করুন। সোফা সিলেকশনের সময় বড় ও এক্সটেন্ডেড হাতল দেওয়াগুলো এড়িয়ে চলুন। আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি ফ্লোরিং সিস্টেম করতে পারেন। এতে আপনার ছোট ঘরকে বড় দেখাবে, আবার আপনার কিছু টাকাও বেঁচে যাবে।

৪. অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফেলে দেওয়া

ঘরে অপ্রয়োজনীয় জিনিস রাখবেন না। ঘরের চারপাশে তাকিয়ে দেখুন। যদি মনে হয় আপনার আশেপাশের জিনিসগুলোর মধ্যে কোনো একটি জিনিস আপনি এক বছরের বেশি সময় ব্যবহার করেননি, অথচ সেটি আপনার ঘরের কিছুটা মূল্যবান জায়গা দখল করে বসে আছে, তবে এখনই সময় জিনিসটি ফেলে দেওয়ার। হতে পারে সেটি কোন পুরোনো ঘড়ি কিংবা বারান্দার এক কোণে অযত্নে পড়ে থাকা কোনো বেতের টুল। যদি ব্যবহার না করেন তবে দান করে দিন। দেখবেন ঘরের জায়গা বেড়ে গেছে এবং ঘর দেখতে পরিপাটি লাগছে।

৫. মাল্টিফাংশনাল ফার্নিচার ব্যবহার করা

মাল্টি ফাংশনাল ফার্নিচার ব্যবহার করুন। এগুলো খরচ, স্পেস দু’টোই সেইভ করে। সেই সাথে মেনটেনেন্সের ঝামেলাও কমিয়ে দেয়। মাল্টি ফাংশনাল ফার্নিচারের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে সোফা কাম বেড। সাধারণ সময়ে এগুলো সোফা হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। আর বাসায় মেহমান আসলে খুলে খাট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। একটা বিশাল খাটের স্পেস বেঁচে গেলো!

৬. কভারের জন্য ছোট প্রিন্ট বাছাই করা

ঘরের চাদর, পর্দা, সোফার কভার আর কুশন কভার বাছাই করার সময় ছোট প্রিন্ট ব্যবহার করুন। অথবা স্ট্রাইপও ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এক কালারের কুশন দিলেও বেশ ভালো লাগবে দেখতে। পর্দার কাপড় এমনভাবে বাছাই করুন যাতে ঘরে পর্যাপ্ত আলো আসতে পারে। এতে কনজাস্টেড লাগবে না এবং ঘরও বড় দেখাবে।

৭. ঘর সাজাতে আয়না

ঘর সাজাতে আয়না ব্যবহার করুন। আয়না ঘরের আয়তন বড় দেখাতে সাহায্য করে। এখন বেতের ফ্রেমিং করা আয়না পাওয়া যায়। এগুলো ওয়ালে সেট করতে পারেন। এতে স্পেস সেইভ হবে এবং দেখতেও ভালো লাগবে।

৮. ফোল্ডিং টেবিল ও টুল ব্যবহার করা

ফোল্ডিং রিডিং টেবিল বা ফোল্ডিং টুল আপনার জন্য হতে পারে লাইফ সেভিয়ার। কাজ শেষে জাস্ট ফোল্ড করে তুলে রাখবেন, এতে ঘরের জায়গা বাঁচবে, অনেক বেশি খোলামেলা দেখাবে। ঘর ছোট হলে সব আসবাব দেয়ালের সাথে লাগাবেন না। ছোট খাটো হালকা কিছু ফার্নিচার একটু অ্যাঙ্গেল করে রাখুন। ঘর সাজানোতে ভিন্নতা আসবে সেই সাথে ঘর একটু বড়ও দেখাবে।

এছাড়াও ঘরে প্রচুর আলো ঢোকানোর ব্যবস্থা করুন। জানালায় গ্লাস ডোর লাগান। আর চেষ্টা করুন দিনের বেশিরভাগ সময় জানালা খোলা রাখার। সান লাইটে আপনার ঘর এমনিতেই বড় দেখাবে।

 

জেএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন