দ্যা হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ‘নির্দিষ্ট সরকার কেন্দ্রিক’ হওয়া উচিত নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্দিষ্ট সরকার বা শাসনব্যবস্থার উপর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উচিত নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। গেলো সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্যা হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব জানান।
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ– ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ভারত থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য–বিবৃতি দেওয়া, সীমান্ত হত্যা, জেলেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প–সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেন উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এখনো চূড়ান্ত না হলেও এপ্রিলে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা করেছে।
তৌহিদ হোসেন জানান, যেই সরকার ক্ষমতায় থাকুক না কেন, দুই দেশের সম্পর্ক হবে রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ও সম্মানের ওপর ভিত্তি করে।
তিনি বলেন, শুধু আওয়ামী লিগের শাসক আমলেই নয়, বিএনপির শাসন আমলেও ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
দুই দেশের সম্পর্কের উত্তেজনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তৌহিদ হোসেন বলে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার সময় দুই দেশের সম্পর্ক ছিল খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। কারণ, এতো দিন ভারত এক ধরনে সম্পর্কে অভ্যস্ত ছিল এবং হঠাৎ করেই দ্রুত তা ভেঙে পড়ে। হয়তো নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কিছুটা সময় লেগেছে, সে কারণে সম্পর্কে অনেক বৈরী মনোভাব এবং অস্বস্তি তৈরি হয়েছিলো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এমন একটি পরিবেশের প্রয়োজন, যেখানে আমরা একে অপরের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারি। ছয় মাস আগের তুলনায় এখন দুই দেশের যোগাযোগ ভালো হয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশে মামলা হয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ভারত যদি তাকে ফেরত নাও পাঠায়, তবে অন্তত তার বক্তব্যে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত যাতে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না হয়।
চুক্তির ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত আদানি পাওয়ার প্রকল্পের যদি কোনো অনিয়ম থাকে, আমরা তা যৌথভাবে পর্যালোচনা করতে পারি। বিদ্যুতের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এটি পুনরায় আলোচনা করা হতে পারে, বিশেষ করে কয়লার ক্রয়মূল্য নিয়ে।
এমএ//