জাতীয়

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন সফল করার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসুন সম্মেলনটিকে সফল করে সংকটের সমাধান করি। আশা করি এটি থেকে কিছু বাস্তবসম্মত ফল আসবে। ভবিষ্যতের একটি সুস্পষ্ট পথ থাকা দরকার। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত।

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহ্বান জানান তিনি

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সাইড ইভেন্টে সব অংশীজনের সম্মেলনআয়োজনের প্রস্তাব দেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ২০ নভেম্বর সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতিশীর্ষক প্রস্তাবে জাতিসংঘ মহাসচিবকে এ সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে কাতারের রাজধানী দোহায় রোহিঙ্গা বিষয়ক ওই সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।

সাক্ষাৎকালে ফিল্লিপো গ্র্যান্ডি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে জাতিসংঘ সম্মেলন একটি দুর্দান্ত উপায়। এটি রাখাইনের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করতে পেরে ইউএনএইচসিআর আনন্দিত উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আগামী মার্চের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সফর এই ইস্যুতে নতুন গতি সঞ্চার করবে।

সাক্ষাৎকালে, তাঁরা উভয়ে বাংলাদেশে ক্যাম্পে বসবাসরত এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও আর্থিক সহায়তা সংগ্রহের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন, বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির নতুন দিকনির্দেশনা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

প্রধান উপদেষ্টা ও ইউএনএইচসিআরের প্রধান  রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন, যেখানে একটি প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। পশ্চিম মিয়ানমার রাজ্যের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের স্বার্থে শত্রুতা কমানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে আলোচনায় উঠে আসে।

এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

আফ্রিকার কিছু মানবিক সংকটের প্রসঙ্গ টেনে গ্র্যান্ডি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের সামরিক শাসনগুলোর বৈধতার অভাব অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য সর্বজনীন শিক্ষার সুযোগ তৈরি এবং শরণার্থীদের জন্য আরও টেকসই আশ্রয় নির্মাণের অনুমতি দেয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রধান।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকার সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

তিনি গ্র্যান্ডিকে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন এবং রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করার উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন