দেশজুড়ে

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে টাকার সঙ্গে মনোবাসনার শত শত চিরকুট

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুললে শুধু টাকা নয়, মেলে মানুষের হাজারো প্রার্থনার প্রতিচ্ছবি। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হলে পাওয়া যায় ২৮ বস্তা টাকা, কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা। তবে নজর কেড়েছে দানসিন্দুকে জমা পড়া শত শত চিরকুট, যাতে উঠে এসেছে মানুষের ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা, প্রার্থনা ও রাজনৈতিক মনোভাব।

প্রতিবারের মতো এবারও এসব চিরকুটে কেউ লিখেছেন রোগমুক্তির প্রার্থনা, কেউ ভালো রেজাল্টের কামনা, আবার কেউ বিদেশ যাওয়ার স্বপ্নের কথা। আছে প্রেম-ভালোবাসা, বিয়ে এবং পরিবারসংক্রান্ত চাওয়া-পাওয়ার কথাও। তবে এবারে কিছু চিরকুটে উঠে এসেছে রাজনৈতিক বার্তা। দেখা গেছে, কেউ লিখেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে, আবার কেউ মত প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব চিরকুটের বিস্তারিত প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। টাকা গণনার আগে এসব চিরকুট আলাদা করে সরিয়ে নেয়া হয় এবং ছিঁড়ে ফেলা হয়।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, ৪ মাস ১২ দিন পর দানসিন্দুক খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সকাল থেকেই দোতলায় বসানো গণনার টেবিলে কাজ শুরু করেন প্রায় ৪০০ জনের একটি দল। এ দলে ছিলেন মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা।

গণনার পুরো প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার, রূপালী ব্যাংকের এজিএম মোহাম্মদ আলী হারিসীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

প্রসঙ্গত, পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে নিয়মিতভাবেই বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা হয়। দানসিন্দুক খুললেই আলোচনায় চলে আসে এই মসজিদের ব্যতিক্রমী আকর্ষণ- টাকার সঙ্গে জমা হওয়া মানুষের নিরব আকুতি, হাতে লেখা সেই চিরকুটগুলো।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন