স্বাস্থ্য

বিয়ের আগে যে স্বাস্থ্য পরীক্ষাগুলো না করলে হতে পারে বিপদ!

বিয়ে শুধু দুটি মানুষের সম্পর্ক নয়, এর সঙ্গে জড়িত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থতাও। তাই একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল থাকতে হলে, বিয়ের আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা একেবারেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। বিয়ের আগেই টেস্টগুলো করে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে ভবিষ্যতের অনেক জটিল সমস্যা থেকে।

১. থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষাঃ হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস

এই পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যায় কেউ থ্যালাসেমিয়ার বাহক কি না। যদি বর-কনে উভয়ই বাহক হন, তাহলে তাদের সন্তান গুরুতর থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। তাই এই বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকাই ভালো।

২. রক্তের গ্রুপ ও RH ফ্যাক্টর মিলিয়ে দেখা

রক্তের গ্রুপ মিল না হলেও সমস্যা নেই, কিন্তু RH ফ্যাক্টরের (পজিটিভ/নেগেটিভ) মিল অনেক জরুরি। যদি স্ত্রী RH নেগেটিভ হন এবং স্বামী RH পজিটিভ, তবে ভবিষ্যতের সন্তানের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। তবে আধুনিক চিকিৎসায় এই ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

৩. যৌনবাহিত রোগ পরীক্ষা

এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া, হেপাটাইটিস বি ও সি- এই রোগগুলো যৌন সংস্পর্শে ছড়াতে পারে। বিয়ের আগে এসব রোগের পরীক্ষা ও চিকিৎসা না করালে, জীবনসঙ্গীর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে, এমনকি ভবিষ্যতের সন্তানেরও ক্ষতি হতে পারে।

৪. সন্তান জন্মদানে সক্ষমতা যাচাই

বর্তমানে বন্ধ্যত্বের সমস্যা অনেক বাড়ছে। তাই বিয়ের আগে বর-কনের উভয়ের প্রজনন ক্ষমতা পরীক্ষা করে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর স্বাস্থ্য এবং নারীর ক্ষেত্রে হরমোন ও আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে এটি নির্ণয় করা যায়।

৫. বংশগত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা

বংশগত রোগ যেমন ডাউন সিনড্রোম, সিকল সেল অ্যানিমিয়া বা অন্য জিনগত সমস্যা—এসবও বিবাহের আগে যাচাই করা দরকার, বিশেষ করে আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ের ক্ষেত্রে।

৬. দীর্ঘমেয়াদি রোগ স্ক্রিনিং

ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা থাইরয়েডের মতো রোগ থাকলে তা আগেই জানা ও জানানো জরুরি। এতে করে বিবাহিত জীবনে যেকোনো জটিলতা সহজে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।

৭. মানসিক স্বাস্থ্যের মূল্যায়ন

ডিপ্রেশন, বাইপোলার ডিজঅর্ডার কিংবা স্কিজোফ্রেনিয়ার মতো মানসিক সমস্যা বিয়ের পর নিজে থেকেই সেরে যাবে—এমন ভ্রান্ত ধারণা বিপজ্জনক। এসব সমস্যা থাকলে আগে থেকেই চিকিৎসা নেওয়া এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

বিয়ে শুধু দুটি মানুষকে নয়, দুইটি পরিবারকেও যুক্ত করে। তাই স্বাস্থ্যগত দিক থেকে সুস্থ ও সচেতন না থাকলে সুখী দাম্পত্য জীবনের স্বপ্ন ভেঙে যেতে পারে। তাই বিয়ের আগে এগুলো জানা ও জানানো নিজের, সঙ্গীর এবং অনাগত সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য জরুরি।

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন