আজ থেকে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু

আজ থেকে বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। জেলেদের দাবি অনুযায়ী বিগত বছরগুলোর চেয়ে সময়সীমা কমিয়ে নিষেধাজ্ঞার পুনর্বিন্যাস করায় খুশি জেলেসহ মৎস্য সংশ্লিষ্ট সকলে ।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২ টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয় বলে বায়ান্ন টিভিকে জানিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম।
জানা যায়, ইলিশ সহ সকল সামুদ্রিক মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরনের জন্য ২০১৫ সাল হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছিলো সরকার। কিন্তু জেলেরা দাবি করে আসছিলো বাংলাদেশে যখন অবরোধ চলে তখন ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের সীমানায় এসে মাছ ধরে ।
ভারতের সঙ্গে মিল রেখে এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা নির্ধারণ করার জন্য তারা দাবী জানান। জেলেদের দাবির প্রেক্ষিতে এ বছর ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৪ এপ্রিল মধ্য রাত থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।
সমুদ্রগামী জেলে মো. সোলায়মান বলেন, বিগত বছরগুলোর চেয়ে সময়সীমা কমিয়ে পুনর্বিন্যাস করায় তারা খুশি। তবে অবরোধকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদেয় প্রনোদনার পরিমান বাড়ানো এবং নিষেধাজ্ঞা শুরুতেই প্রনোদনা প্রদানের দাবী জানান তিনি।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মাদ আলী,বলেন সরকারের এ যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ সহ প্রতিবেশী জেলেরা ব্যাপক উপকৃত হবে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘জেলেদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হয়েছে। এছাড়াও জেলেদের ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও চলছে।’
তিনি আরও বলেন, 'মূলত দুটি কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রজনন সুবিধায় যাতে মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। আর অপরটি হলো- ছোট মাছকে বড় হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। যার জন্য বর্তমানে বড় আকারের ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে।এবার আমাদের অবরোধ ফলপ্রসূ হবে'।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক প্রদীপ কুমার সরকার বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রত্যেক জেলেকে ৭৭ কেজি করে চাল প্রদান করা হবে। এছাড়া অবরোধ শতভাগ সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতির সম্পন্ন করা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলায় নিবন্ধিত জেলে ৮১ হাজার থাকলেও এর মধ্যে সমুদ্রগামি জেলের সংখ্যা ৪৮ হাজার।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে একই সময় অবরোধ দেয়ার দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল জেলেদের এবছর একসাথে অবরোধ দেয়ার কারণে বাংলাদেশ জেলেরা অনেক খুশি, আমরা ব্যাপক পোষ্টার লিফলেট মাইকিং সহ জেলেদের সচেতনতা তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছি, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ এবং জেলা পুলিশের সহযোগিতায় বিগত বছর এর তুলনায় এবছর আরও বেশি সফল হবো, সরকার এ বিষয় অনেক আন্তরিক’।
আই/এ