মব জাস্টিস চলবে না, রেহাই পাবে না ঘুষখোর ওসিরাও: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গণপিটুনির মতো ঘটনা আর বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘মব জাস্টিস অ্যালাউ (অনুমোদন) করা যাবে না। অনেক হয়েছে। কারও কিছু বলার থাকলে আইনগত প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেক উন্নত।’
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সশস্ত্র বাহিনী ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাবিষয়ক নানা ইস্যুতে কঠোর অবস্থানের বার্তা দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন থানা থেকে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছিল, তার সব এখনো উদ্ধার হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব সেগুলো উদ্ধার করতে হবে।’
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনে মুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক বড় বড় সন্ত্রাসী জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছে। যদিও বিষয়টি বিচারকদের এখতিয়ার, তবু আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।’
পুলিশ প্রশাসনে ঘুষ ও তদবির প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘থানার ওসি যেন ঘুষ না খায়, তা সংশ্লিষ্টদের দেখতে হবে। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে পেরেছি, বদলি বাণিজ্যও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে তদবির বন্ধ হয়নি। উপদেষ্টা হওয়ার পর আমার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে! এদের অনেককেই আমি চিনি না। কেউ তদবির করতে এলে প্রথমে তাকে চা-নাস্তা খাওয়াবেন, এরপর পুলিশে দিন।’
পুলিশের দায়িত্ব পালনে পেশাদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কাউকে সিভিল ড্রেসে (সাধারণ পোশাকে) গ্রেপ্তার করতে পারবে না। আবার তেলবাজি সংস্কৃতিও ফেরার চেষ্টা করছে- এটা বন্ধ করতে হবে।’
মাদক ইস্যুতে কঠোর অবস্থান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘মাদক দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। মাদকের বিরুদ্ধে অ্যাকশন না নিলে চাকরি থাকবে না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ১৫ হাজার বোতল ফেনসিডিল ছেড়ে দিয়ে ৫০০ বোতল রিকভার দেখানোর সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। আমরা পুনর্বাসন কেন্দ্র খুলতে চাই না, মাদক বন্ধ করতে চাই।’
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, যশোর সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল জেএম ইমদাদুল ইসলাম, ডিআইজি (খুলনা রেঞ্জ) মো. রেজাউল হক, জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহানসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এসি//