মুরাদনগরে ধর্ষণ
যেভাবে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ফজর আলী
কুমিল্লার মুরাদনগরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৯ জুন) ভোরে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে ফজর আলীকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে মুরাদনগরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক প্রবাসীর স্ত্রী (২৫) ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত ফজর আলী ঘটনার পর স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েন এবং গণপিটুনির শিকার হয়ে আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পরদিন রাতের কোনো এক সময় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান তিনি। আত্মগোপনে যাওয়ার আগে বন্ধ করে দেন নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও।
এসব তথ্য জানিয়েছে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি সূত্র।
সূত্রটি বলছে, ভিডিও ভাইরাল এবং ভুক্তভোগী নারীর মামলা দায়েরের পর নিকটাত্মীয়দের সহযোগিতায় গা ঢাকা দেন ফজর। আত্মগোপনে যাওয়ার সময় মোবাইল নম্বর বন্ধ করে ফেলেন তিনি।
পরে পুলিশ এবং গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দুইটি টিম ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পুলিশের নিজস্ব ডিটেকটিভ টেকনোলজি এবং এনালগ মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রাখে।
শনিবার (২৮ জুন) রাতে ফজর আলীর অবস্থান আঁচ করে পুলিশ। রাজধানীর সায়েদাবাদে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ফজর, এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ছদ্মবেশে ওই হাসপাতালে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় তার অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। পরে রোববার ভোরে ফজরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের নিজস্ব কৌশলে ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকের ছাড়পত্র পেলে তাকে আদালতে তোলা হবে। গ্রেপ্তার অপর চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ধর্ষণের ঘটনার নগ্ন ভিডিও ভাইরাল করার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে হোমনা থেকে মুরাদনগরে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসা এক নারীকে পাঁচকিত্তা গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে ফজর আলী কৌশলে ঘরের দরজা খুলে ধর্ষণ করেন। ঘটনার সময় আশপাশের কয়েকজন লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ভুক্তভোগী নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখে ভিডিও ধারণ করে এবং পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তিনি দুই সন্তানের মা।
এসি//