একটি মহল বিএনপিকে সংস্কার বিরোধী বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
নির্বাচন পেছানোর কৌশল হিসেবে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব’-এর চেতনার সঙ্গে একাত্ম নয়, তারাই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটাতে চাইছে।
রবিবার (০৬ জুলাই) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি কখনোই জুলাই সনদের বিরোধিতা করেনি। অথচ আমাদের সংস্কারবিরোধী বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা সত্যের অপলাপ।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সংস্কার কমিশনের নাম করে এমন কিছু প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, যা সময়ক্ষেপণ ছাড়া আর কিছুই নয়। অনেক সুপারিশ রয়েছে, যেগুলো আসলে রাষ্ট্রের কাঠামো দুর্বল করে ফেলবে এবং প্রকৃত সংস্কারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুলিশ সংস্কার ইস্যুতে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল এবং নির্বাচন কমিশনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে একমত।
বিএনপির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের দেওয়া ২৪৩টি সুপারিশের মধ্যে দলটি ১৪১টির সঙ্গে আংশিকভাবে একমত হয়েছে, আর ৬৪টি প্রস্তাবে রয়েছে স্পষ্ট আপত্তি।
মির্জা ফখরুল জানান, ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে দুদক সংস্কার কমিশনের ৪৭টি সুপারিশের মধ্যে ৪৬টিতে তারা একমত।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮টি সুপারিশের মধ্যে ১৮৭টি বিএনপি মেনে নিয়েছে। ৫টিতে আংশিক মত ও ৫টিতে ভিন্নমত রয়েছে। আর ১১টি সুপারিশে বিএনপি দ্বিমত জানিয়েছে, বিশেষ করে প্রদেশ গঠন ও পদোন্নতি সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোতে।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের ৮৯টি সুপারিশের মধ্যে ৬২টি নিয়ে বিএনপি একমত হয়েছে, ৯টিতে আংশিক এবং ১৮টিতে ভিন্নমত জানিয়েছে। তবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোতে দলটি একমত।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের ১৩১টি প্রস্তাবের অধিকাংশে একমত হয়েছে বিএনপি। আলোচিত ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণের প্রস্তাবেও ছাড় দিয়েছে দলটি, যদিও বিশ্বে এমন নজির নেই বলে জানিয়েছে তারা। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে আগের অবস্থান থেকেও বিএনপি সরে এসেছে।
এমএ//