দেশজুড়ে

ফেনীতে নদী ভাঙনে প্লাবিত ৩০ গ্রাম, পানিবন্দি হাজারো মানুষ

ফেনীতে লাগাতার বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সেলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৪টি পয়েন্ট ভেঙে পড়েছে। এর ফলে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রাম পানির নিচে চলে গেছে। মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দিবাগত রাত পর্যন্ত প্লাবন অব্যাহত থাকায় কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, মুহুরী নদীর পারের পরশুরামের জঙ্গলঘোনা, অলকা ও শালধর এবং ফুলগাজীর উত্তর শ্রীপুর এলাকায় ছয়টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙেছে। সিলোনিয়া নদীর পাড়েও পরশুরামের গদানগর ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকায় তিনটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া কহুয়া নদীর পাশে সাতকুচিয়া, বেড়াবাড়িয়া ও দৌলতপুরেও বাঁধ ভেঙেছে।

পরশুরামের ইউএনও আরিফুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় প্রশাসন মাঠে অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে, তবে মানুষ এখনো নিজ উদ্যোগেই কোথাও আশ্রয় নিচ্ছে।

ফুলগাজীর ইউএনও ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, ‘বাঁধ ভাঙনের কারণে শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। তাদের জন্য শুকনো ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার থেকে পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।’

ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (০৮ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত) জেলায় ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগামী দুই দিনও বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যদিও মাঝরাতের পর কিছুটা কমেছে। তবে উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাঁধ আরও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফুলগাজীতে ৩২টি মাধ্যমিক ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরামে ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্গতদের সহায়তায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

 

এমএ//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন