দিনাজপুরে চিকিৎসককে মারধর; স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কসহ ১০ জন গ্রেপ্তার
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধোরের অভিযোগে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন নারী। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সেদিন রাতেই ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার দলীয় পদ স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ওই চিকিৎসককে মারধোর করা হয়। পরে চিকিৎসক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আল মামুনসহ ১৩ জনকে আসামি করে হাকিমপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
জানাগেছে, হাকিমপুর হিলি পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আল মামুনের এক আত্মীয় মারধরের ঘটনায় আহত হয়ে প্রায় ১৫ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি ৩ নং কেবিনে ভর্তি থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ডা. মশিউর রহমান রাউন্ডে তার কেবিনে যান। রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় তাকে ছাড়পত্র দেন। কিন্তু রোগী ছাড়পত্র নিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর দুপুর ২টার দিকে আল মামুন ১৫/২০ জন লোকজন নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান। সেখানে কর্তব্যরত তিনজন চিকিৎসককে মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। মারধোরের আঘাতে জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান, স্বাস্থ্য সহকারী রুহুল আমিন এবং ফয়সাল হোসেন সেতু আহত হন।
এদিকে বৃহস্পতিবার ঘটনার দিনশেষে রাতে ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার দলীয় পদ স্থগিত সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল দিনাজপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু মুন্সী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল হাকিমপুর হিলি পৌর শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ে দলীয় কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাসেল চৌধুরী লিমন ও সদস্য সচিব সাইফুল আযম হোসেন সিদ্ধান্তটি অনুমোদন করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, হাকিমপুর হিলি পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও চন্ডিপুর মহল্লার লিয়াকত আলীর ছেলে আল মামুন (৩৫), মাঠপাড়া মহল্লার ওমর ফারুক (৩৫) তার স্ত্রী সুখী বেগম (৩০), দক্ষিণবাসুদেবপুর মহল্লার আব্দুর রশিদের ছেলে আমিরুল (৩২), মধ্যবাসুদেবপুর মহল্লার কুতুব উদ্দিনের ছেলে খোকন মন্ডল (৩৮), একই মহল্লার আবু বক্করের ছেলে শাওন (৩০) এবং চন্ডিপুর মহল্লার সাদেক হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩৬), বাবুল হোসেনের ছেলে ওয়াদুদ (৩৬), আনোয়ার হোসেনের ছেলে আলতাফ হোসেন (৩০) ও মোজ্জাম্মেল হোসেনের ছেলে আলতাফ হোসেন (২৬)।