লাইফস্টাইল

প্রসাবে জ্বালাপোড়া : কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

শারীরিক কোনও অস্থিরতার ইঙ্গিত হিসেবে অনেকেই অনুভব করেন প্রসাবে জ্বালাপোড়া বা ডাক্তারি ভাষায় Dysuria। এটি মূলত প্রস্রাবের সময় পোড়া বা জ্বালা অনুভব করা, যা নাক ও গলার মিউকাসের মতো অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সংক্রমণ বা প্রদাহের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে এবং সঠিকভাবে বুঝে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, বিশেষ করে মূত্রনালিতে থাকা ই.কোলাই (E. coli)। এর ফলে মূত্রনালি ও মূত্রাশয়ে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, যা প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া অনুভূত করে। পাশাপাশি যৌনসংক্রমণ (STIs) যেমন গনোরিয়া, ক্ল্যামিডিয়া বা হারপিসও এই সমস্যার কারণ হতে পারে।

কেবল সংক্রমণই নয়, অনেক সময় মূত্রনালির পাথর, প্রদাহ বা ক্ষত থেকেও প্রসাবে পোড়া অনুভূত হতে পারে। দীর্ঘ সময় ক্যাটেটার ব্যবহার বা আঘাত থাকলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে কিছু রাসায়নিক বা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া যেমন সাবান, কনডম বা পেরফিউমযুক্ত টিস্যু ব্যবহার করলেও জ্বালাপোড়া হতে পারে।

মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি আরও স্পর্শকাতর বিষয়। প্রেগন্যান্সি বা মেনোপজের সময় হরমোন পরিবর্তনের কারণে মূত্রনালি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে, আর এর ফলে প্রস্রাবের সময় জ্বালা বা পোড়া অনুভূত হতে পারে। যৌনমিলন বা মাসিকের আগে এই সমস্যা কিছুটা তীব্র হতে পারে।

কারণ :

•মূত্রনালি সংক্রমণ (UTI): সবচেয়ে সাধারণ কারণ ব্যাকটেরিয়া, বিশেষ করে E. coli, যা প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে।

•যৌন সংক্রমণ (STIs): গনোরিয়া, ক্ল্যামিডিয়া বা হারপিসও সমস্যার কারণ হতে পারে, যেখানে অস্বাভাবিক স্রাব দেখা দিতে পারে।

•মূত্রনালি প্রদাহ বা ক্ষত: কিডনি বা মূত্রনালির পাথর, দীর্ঘমেয়াদী ক্যাথেটার ব্যবহার বা শারীরিক আঘাত জ্বালাপোড়া তৈরি করতে পারে।

•রাসায়নিক বা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া: সাবান, শাওয়ার জেল, কনডম বা পেরফিউমযুক্ত টিস্যু ব্যবহারের কারণে।

•মহিলাদের ক্ষেত্রে: প্রেগন্যান্সি বা মেনোপজের সময় হরমোন পরিবর্তনের কারণে মূত্রনালি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। বিশেষ করে মাসিকের আগে বা যৌনমিলনের পরে জ্বালাপোড়া আরও তীব্র হতে পারে।

লক্ষণসমূহ :

•প্রসাবের সময় পোড়া বা জ্বালা অনুভব

•বারবার প্রস্রাবের প্রয়োজন বা হঠাৎ ধরা

•প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন (সাদা, হলুদ বা লাল)

•প্রস্রাবের দুর্গন্ধ

•কিডনি সংক্রমণের ক্ষেত্রে জ্বর, কোমরব্যথা বা ক্লান্তি

প্রতিকার ও চিকিৎসা :

•ঘরোয়া: প্রচুর পানি, ক্র্যানবেরি জুস, উষ্ণ সিটজ বাথ

•ডাক্তারি: অ্যান্টিবায়োটিক (ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণে), এন্টিফাঙ্গাল (ফাঙ্গাসজনিত সংক্রমণে), ব্যথা কমানোর ওষুধ (Analgesics/Phenazopyridine)

প্রতিরোধ :

•নিয়মিত পানি পান ও হাইজিন বজায় রাখা

•যৌনমিলনের আগে ও পরে প্রস্রাব

•সংবেদনশীল সাবান ও রাসায়নিক এড়িয়ে চলা

•পরিচ্ছন্ন অন্তর্বাস ব্যবহার

•নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ

সতর্কতা :

•সমস্যা ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে

•জ্বর, রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব, কিডনি বা কোমর ব্যথা থাকলে

•শিশু, প্রেগন্যান্ট মহিলা বা বয়সে বড়দের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন