অবহেলায় চুলও নীরবে জানায় তার ব্যথার গল্প
চুলের যত্নের কথা উঠলেই অনেকের প্রথম চিন্তা—সময়! ধোয়া, শুকানো, সাজানো—সব মিলিয়ে যেন এক ঝামেলার অধ্যায়। তাই একদিন এড়িয়ে যাওয়া সহজ। কিন্তু চুলও তো জীবন্ত এক অঙ্গের মতো, যত্ন না পেলে সে প্রতিবাদ জানায় নিজের মতো করে। তার ভারি ভাব, নিস্তেজ চেহারা কিংবা অস্বস্তিকর গন্ধ—সবই সেই নীরব প্রতিবাদের ভাষা।
প্রথমে চোখে পড়ে চুলের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব। মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল বা সিবাম জমে গিয়ে চুল ভারি, নিস্তেজ এবং অস্বস্তিকর গন্ধ তৈরি করতে পারে।
রূপবিশেষজ্ঞদের মতে, “চুল ধোয়ার অভাব শুধু চুলকে ভারি করে না, সঠিক পরিচর্যার অভাবে মাথার ত্বকও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”
সেটার সঙ্গে যুক্ত হয় মাথার ত্বক চুলকানো বা জ্বালা ধরা। অতিরিক্ত সিবাম শুধু ত্বককে আর্দ্র রাখে না, এটি ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ার জন্যও খাবারের উৎস হয়ে ওঠে, যা দ্রুত প্রদাহ সৃষ্টি করে। তাই মাথায় চুলকানি বা জ্বালা অনুভূত হলে বুঝতে হবে, চুল ধোয়ার ফ্রিকোয়েন্সি কমে গেছে।

খুশকি ও ত্বক খসখস করা আরেকটি সংকেত। চুলে নিয়মিত শ্যাম্পু না করলে সিবাম জমে, যা খামির-জাতীয় জীবাণুর জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। বারবার খুশকি দেখা দিলে বিশেষজ্ঞরা ‘মেডিকেল্ড অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু’ ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
যাদের আগে থেকেই মাথার ত্বকে সমস্যা আছে—যেমন খুশকি বা চুলকানি—তাদের জন্য চুল না ধোয়া সমস্যা আরও জটিল করে তোলে। একই সঙ্গে, নানান চুলের পণ্যের অবশিষ্টাংশ যেমন সেরাম, তেল, জেল বা ফোম ঠিকমতো না ধোয়া হলে চুলে একটি আঠালো স্তর তৈরি হয়। তাই শ্যাম্পু একবার নয়, দুবার ব্যবহার করুন। প্রথমবার ময়লা দূর হবে, দ্বিতীয়বার চুলের গভীর পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত হবে।”
চুল পড়া বা ভেঙে যাওয়ার কারণও কম ধোয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। মাথায় জমে থাকা তেল, ময়লা ও দূষণ প্রদাহ তৈরি করে, যা চুলের আর্দ্রতা শোষণে বাধা দেয়। ফলস্বরূপ চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
শেষে, চুলের ভিজ্যুয়াল অবস্থা। নিয়মিত না ধোয়া চুলকে ভারি ও নিস্তেজ দেখায়। তেলের সঙ্গে স্টাইলিং পণ্যের জমে থাকা স্তর চুলের স্বাভাবিক ঘনত্ব ও বাউন্স কমিয়ে দেয়। আধুনিক অনেক চুলের পণ্যে এমন উপাদান থাকে, যা পরিষ্কার না হলে চুলকে আরও ভারি করে তোলে।
নিয়মিত পরিচর্যা এবং সঠিক সময়ে চুল ধোয়া, তাই শুধু সৌন্দর্য নয়—চুল ও মাথার স্বাস্থ্য রক্ষারও মূল চাবিকাঠি।
এসি//