দেশজুড়ে

হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে পঞ্চগড়, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে

ভোরের আলো ফোটার আগেই পঞ্চগড়ের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধূসর এক আবছায়া। মাঠের ঘাসে জমে থাকা শিশিরের বিন্দু যেন রুপালি মুক্তোর মতো চকচক করছে। দূরে দেখা যায় না কিছুই—সবকিছু যেন ঢেকে আছে এক নিঃশব্দ কুয়াশার চাদরে। বাতাসে হালকা ঠান্ডা, কিন্তু সেই হিমেল পরশে মিশে আছে শীতের আগমনের গান।

দেশের সর্বউত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামছে তাপমাত্রার পারদ, বাড়ছে শীতের আমেজ। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। আগের দিন একই স্থানে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি। অর্থাৎ একদিনেই প্রায় দুই ডিগ্রি কমে গেছে পারদ।

বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৯ শতাংশ, ফলে সকাল থেকে চারপাশ ঢেকে যায় ঘন কুয়াশায়। জেলার মাঠ-ঘাট, গ্রামীণ জনপদ থেকে শুরু করে শহরের রাস্তাঘাট—সবকিছুই ঢেকে যায় সাদা কুয়াশার চাদরে। দৃশ্যমানতা কয়েক হাত দূরে নেমে আসায় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সন্ধ্যা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকবে চারপাশ। কোথাও কোথাও দিনের বেলাতেও দেখা যেতে পারে কুয়াশা। কারণ বাতাসে রয়েছে প্রচুর জলীয় বাষ্প, যা সূর্যের আলোকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে বাধা দেয়। ফলে রাতে দ্রুত ঠান্ডা পড়ে এবং ভোরে সৃষ্টি হয় ঘন কুয়াশা।

এ ধরনের আবহাওয়া সাধারণত শীত ও গ্রীষ্মের সন্ধিক্ষণে দেখা যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এই শীতের আগমন ক্রমে হচ্ছে অনিশ্চিত ও অস্বাভাবিক।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, “বর্তমানে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে। নভেম্বরের শেষ দিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এরপর ডিসেম্বরজুড়ে পঞ্চগড় ও আশপাশের এলাকায় একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

শীতের প্রথম ছোঁয়ায় জমে উঠেছে পঞ্চগড়ের প্রভাত। গরম চায়ের কাপে ভাঁজ পড়ে ঠোঁটে, শিশিরে ভেজা পাতায় জেগে ওঠে এক নতুন সকাল—বাংলার উত্তরপ্রান্তে শুরু হয়ে গেছে শীতের উৎসব।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন