আর্কাইভ থেকে ক্রিকেট

আইপিএল: বিসিসিআই’র বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার মামলা

প্রায় মাসখানেক ধরে ভারতে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। ব্যাপারটা আসলে ‘ঊর্ধ্বমুখী’ এই একটা বিশেষণে বেঁধে রাখা অন্যায় হবে। কারণ এই সময়টাতে ভারতে করোনার সংক্রমণ সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে; সেখানেই থেমে নেই।

এখনও প্রতিদিন দেশটিতে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুও বাড়ছে দেশটিতে। দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, ব্যাঙ্গালুরুর হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভিড়, অক্সিজেন সংকট, আইসিউ ঘাটতি- সব কিছু যেন ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।

ভারতের বড় শহরগুলোতে শ্মশানে লাইন ধরে মৃতদেহ পোড়ানোর ছবি বিশ্ব বিবেককেই নাড়া দিয়েছে। 

তবে এত কিছুর পরও মঙ্গলবার (৪ মে) স্থগিতাদেশের ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত আইপিএলের আয়োজন নিয়ে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ ছিল অনেকের মধ্যেই। 

জৈব সুরক্ষা বলয় ভেদ করেই আইপিএলের চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর টনক নড়ে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই)। স্থগিত ঘোষণা করা হয় বিশ্বের সবচেয়ে অর্থকরী ক্রিকেটের টি-টোয়েন্টি লিগ আইপিএল।

খানিকটা গড়িমসি করে হলেও শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের আক্রমণে স্থগিতই হয়েছে আইপিএল। তবে আইপিল স্থগিতের ঘোষণা আসার এক দিন না পেরোতেই এবার সৌরভ গাঙ্গুলির বিসিসিআই’র বিরুদ্ধে ১০০০ কোটি টাকার জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন আইনজীবী বন্দনা শাহ। মুম্বাই হাইকোর্টে এই মামলা দায়ের করেছেন তিনি। 

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত জুড়ে করোনাভাইরাস হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিলেও, বিসিসিআই কর্তারা নিজের সুবিধা ও টাকার জন্য চোখ-কান বন্ধ করে আইপিএল চালিয়েছেন। এই মর্মে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
 
জনস্বার্থে করা এই মামলায় আরও বলা হয়েছে, বিসিসিআই যেন এক হাজার কোটি টাকা কোভিড আক্রান্ত মানুষদের অক্সিজেন এবং ওষুধের জন্য ব্যয় করে এবং তাদের কাছে ক্ষমা চায়।

আইপিএল বন্ধ ঘোষণা আসার আগে আট ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে চারটিতেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই চার ফ্র্যাঞ্চাইজি বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে চলে যায়। 

বাকি চার ফ্র্যাঞ্চাইজি রাজস্থান রয়্যালস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসেও যে তখন পর্যন্ত কেউ কোভিড পজিটিভ হননি, সে নিশ্চয়তা অবশ্য পাওয়া যায়নি। 

কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করেই মাসখানেক ধরে চলছিল আইপিলের এবারের আসর। কোনো বিরতি বা বাধা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে ২৯টি ম্যাচ। তবে কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয়ের কথা বললেও এই নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে। 

আইপিএলের বলয়ের মধ্যেই করোনা ঢুকে পড়েছে। এত কঠোর জৈব সুরক্ষা বলয়েও কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুই ক্রিকেটার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। চেন্নাই সুপার কিংসের বোলিং কোচসহ দুই কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। 

মঙ্গলবার (৪ মে) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা আক্রান্তের খবর আসতেই আইপিএল স্থগিতের ঘোষণাও এসেছে তখন। তবে আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হলেও এ নিয়ে এখনই কথা শুরু হয়েছে যে, আবারও কবে মাঠে গড়াবে আইপিএলের ১৪তম আসরের বাকি ম্যাচগুলো। 

দুই ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে, এক সপ্তাহ সবাইকে কঠোর কোয়ারেন্টিন করিয়ে মুম্বাইয়ে আবার আইপিএল শুরু করা হতে পারে বা এবারের মতো আইপিএল শেষ, এটা মেনে নেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বিসিসিআই। আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আইপিএলের বাকিটা আয়োজনের চেষ্টা করার কথাও শোনানো হচ্ছে। 

এস

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন