আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সৌদিতে যাওয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে নিশ্চিত করতে হবে কোয়ারেন্টিন

সৌদি আরবে যাত্রা শুরুর অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে দেশটিতে কোয়ারেন্টিন হোটেল প্যাকেজ নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি সরকার। 

মঙ্গলবার (২৫ মে) সৌদি এয়ারলাইনসটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মামের যাত্রীদের যাত্রা শুরুর কমপক্ষে ৭২ ঘণ্টা আগে কোয়ারেন্টিন হোটেলসহ প্যাকেজ নিশ্চিত করতে হবে। প্যাকেজটি নিশ্চিত করতে বিমান অফিস অথবা ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বিমান হলিডে ওয়েবসাইট থেকে হোটেল বুক করতে হবে। অন্য মাধ্যমে হোটেল বুক করলে তা গ্রহণ করা হবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া ফ্লাইট সৌদি আরবে অবতরণ করার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা ও রিপোর্ট গ্রহণ করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

সৌদি আরবে অনাবাসিক ও প্রথমবারের মতো ভ্রমণকারীদের মধ্যে যারা করোনা টিকার দুটি ডোজই নিয়েছেন এবং দ্বিতীয় ডোজের পর ১৪ দিন শেষ হয়েছে, তাদের কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই। তবে ভ্রমণের সময় অবশ্যই টিকা গ্রহণের প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।

সৌদি আরবে আবাসিক বা ইকামাধারীদের মধ্যে যারা সেখান থেকে তাওয়াকল্না অ্যাপ-এর মাধ্যমে করোনা টিকার প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন, তাদেরও কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন নেই বলে জানানো হয়েছে বিমানের বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে ছুটিতে আসা প্রবাসীকর্মীদের ফেরা নির্বিঘ্ন করতে ২ জুন পর্যন্ত বিনা মূল্যে ইকামার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে সৌদি সরকার।

সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশি নাগরিকদের সৌদি ভ্রমণে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশের সরকার। এতে বলা হচ্ছে, দেশটিতে ভ্রমণ করতে যাওয়া সব বিদেশি নাগরিককে বাধ্যতামূলক কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত ইনস্যুরেন্স করতে হবে। এই ইনস্যুরেন্সের আওতায় হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিনের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসগুলোকে। দেশটিতে যেতে চাওয়া যাত্রীদের ভ্রমণের প্রথম ও সপ্তম দিন পিসিআর টেস্টের ব্যবস্থাও এয়ারলাইনসকে করতে হবে বলে শর্ত দেয়া হয়েছে।

ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকাও এয়ারলাইনসকে যাত্রার চার দিন আগে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে সৌদি আরব। নতুন এই শর্ত কার্যকর হয়েছে ২০ মে থেকে।

সৌদি সরকারের এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের ফলে বিপাকে পড়েছেন ছুটিতে দেশে আসা প্রবাসী কর্মীরা। টিকিট কেটেও দেশটিতে যেতে পারছেন না তারা। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে হোটেল বুকিং দেয়ার পর জানতে পেরেছেন নির্দিষ্ট একটি অ্যাপের মাধ্যমে বুকিং না দিলে তা গ্রহণ করা হচ্ছে না। এদের অনেকেরই ইকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের যাওয়াও অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

বিমান ছাড়া ঢাকা থেকে দেশটির বিভিন্ন গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস ও নাস এয়ার। কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত না করতে পারায় টিকিট কেটেও যেতে পারেননি অনেক যাত্রী।

যে দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসে এর শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব। দেশটির বিভিন্ন শহরে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি নানা খাতে কাজ করছেন। গত অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৪০০ কোটি ৫১ লাখ ডলারের রেমিটেন্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৪৭৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।

শুধু কাজের জন্য নয়, এর বাইরে হজ ও ওমরাহ করতেও বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি সৌদি আরবে যান। ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হলে ভোগান্তি বাড়ে যাত্রীদের।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছিল সৌদি আরব। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিল ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফ্লাইট না থাকায় ছুটিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশকে অনিশ্চয়তায় পড়তে হয়েছিল। পরে অবশ্য সরকারের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান হয়।

শুভ মাহফুজ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন