আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ভারতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে চারজনের মৃত্যু

ভারতে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। প্রচন্ড শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে দেশটিতে মারা গেছে অন্তত চারজন। এর মধ্যে ওড়িষাতেই তিনজন। বাকি একজন মারা গেছে পশ্চিমবঙ্গে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, ভারতের স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিট নাগাদ ওড়িশার বালেশ্বরের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করে ইয়াস। এ সময় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫৫ কিলোমিটার। প্রায় তিন ঘণ্টা প্রবল তাণ্ডবের পর বালেশ্বর ও ধামারার মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে স্থলভাগে উঠে যায় ঘূর্ণিঝড়টি। ওই সময় সেখানে প্রবল ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের দুইটি জেলার অর্ধশতাধিক বাঁধ ভেঙে গেছে। ধসে গেছে তিন লাখ ঘরবাড়ি।

ঝড়ের প্রভাবে ওড়িশার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে কয়েক ফুট উচূঁ জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে অনেক গাড়ি। গাছ ভেঙে বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইয়াসের আঘাতে বালেশ্বর, ভদ্রক, জগৎসিংপুর এবং কেন্দ্রপাড়া সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকা বলে জানিয়েছেন, ওড়িষার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েক।

এদিকে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় সৈকত দিঘা, মান্দারমনি, শঙ্করপুর, তাজপুরসহ অনেক এলাকায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে গেছে। পশ্চিম ও পূর্ব মেদেনীপুরে ৬৬টি বাধ ভেঙে পানি ঢুকে গেছে লোকালয়ে। কাছাকাছি সময়ে ঘূর্ণিঝড়, পূর্ণিমা ও চন্দ্রগ্রহণ হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা আরও বাড়ার সতর্কতা দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।

ইয়াসের আঘাতের আগেই ওড়িশার উপকূল থেকে ছয় লাখ এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূল থেকে সাড়ে ১১ লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সতর্কতা হিসেবে বন্ধ রাখা হয়েছে কলকাতা ও ওড়িশার বিমানবন্দরগুলো। বন্ধ মেট্রো ও রেল চলাচলও।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের নামানো হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলে রেড এলার্ট জারি রয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে এই প্রাকৃতিক দুর্ভোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক কোটি মানুষ। ভেঙে পড়েছে তিন লাখের মতো ঘরবাড়ি। উপকূলীয় এলাকাগুলোয় ১২৪টির মতো বাঁধ ভেঙেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে এ পরিসংখ্যান দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রকোপে সেচ, কৃষি ও মৎস্যক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার নাগাদ ঝড়টি দুর্বল হয়ে ঝাড়খন্ড অতিক্রম করতে পারে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়টি। বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৭৫ থেকে ৮৫ কিলোমিটার। ইয়াসের ঘূর্ণণবেগ সর্বোচ্চ ৯৫ কিলোমিটার।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন