আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাওয়াতে ছাত্রলীগের নেতা হাতে বাবা লাঞ্ছিত

মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরের শিবচরে ৯ম শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচার চাওয়ায় অভিযুক্তদের হাতে উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন ধর্ষিতার পিতা।

বিষয়টিকে মানবধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলছে স্থানীয় মানবধিকারকর্মীরা।

ধর্ষিতা ছাত্রী জানায়, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচারনায় নামে মোস্তাফিজুর রহমান নাসির। সেই সুবাদে দেড় মাস আগে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গেলে নাসিরের সাথে শিক্ষার্থীর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে নাসির মাদ্রাসা ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে।

গত ২১ মে সকালে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নাসিরের এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ধর্ষিতা ও তার পরিবারের। 

এদিকে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এলাকার মাদবরদের কাছে অভিযোগ দিয়ে কোন বিচার পায়নি ধর্ষিতার পরিবার। পরে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগি পরিবারকে দারস্থ হতে হয় আদালতে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান নাহির। সমাধানের কথা বলে নির্যাতিতার বাবাকে শনিবার সকালে মাদারীপুর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ডেকে মারধর করে।

স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে নাসিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়, এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মো. কামরুল ইসলাম মিঞা, জানান শিবচর উপজেলার বাশকন্দি ইউপির বাসিন্দা নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে এমন অভিযোগ করেন ধর্ষিতার পিতা। পাশাপাশি সে ধর্ষক মাদারীপুরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে এবং আমাকে মারধর করেছে। পরে পুলিশ ঐ আবাসিক হোটেল থেকে মোস্তাফিজুর রহমান নাসির নামের একজনকে আটক করে। ঘটনাটি শিবচর থানাধীন হওয়ায় শিবচর থানার কাছে অভিযুক্তকে সোপর্দ করা হয়েছে।

এসময় নির্যাতিতা শিক্ষার্থী ধর্ষক নাসিরের কঠিন বিচার চান। ওর বিচার না হলে সমাজে মুখ দেখাতে পারবেন না বলেন জানান ওই শিক্ষার্থী।

মেয়েটির বাবা জানান, নাসির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও মাদারীপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। এজন্য এলাকায় তার খুব প্রভাব। মাদবরদের কাছে বিচার চেয়েও পাইনি। উল্টো নাসিরের হাতে মার খেতে হয়েছে।

এদিকে মানবধিকারকর্মী সুবল বিশ্বাস বলেন, একটি বিষয় দুটি ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এর কঠিন বিচার হওয়া দরকার।

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, এই ঘটনায় মেয়েটির পরিবার এখনো থানায় আসেনি। ইতিমধ্যে সদর ওসি অভিযুক্ত নাসিরকে আটকের কথা মোবাইলে জানিয়েছেন। নাসিরকে থানায় নিয়ে আসতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার অভিযোগ দিলে মামলা হবে।

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন