আর্কাইভ থেকে এশিয়া

কুখ্যাত ইভিন কারাগারে আগুন ও গোলাগুলির শব্দ

পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের সাংবাদিক এবং বিদেশি নাগরিকদের বন্দি রাখার জন্য কুখ্যাত ইভিন কারাগারে একটি বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮ জন আহত হয়েছে। এছাড়া সেখানে গোলাগুলির শব্দও পাওয়া গেছে।

রোববার (১৬ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেয়া এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অনলাইনে শেয়ার করা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে তেহরানের ওই স্থাপনায় আগুন ও ধোঁয়া দেখা গেছে এবং গুলির শব্দ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বিপর্যস্ত ইরান। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের পুলিশ হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে প্রথম বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেন, ওই তরুণী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তবে ভুক্তভোগীর পরিবার এই বিষয়ে বিরোধিতা করে বলছে, তাকে নৈতিকতা পুলিশ মারধর করেছে।

কুখ্যাত ইভিন কারাগারে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা দেশটির সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা এখনও জানা যায়নি। কিন্তু এটা সহজেই হতে পারে। কারণ আটকের পর শত শত বিক্ষোভকারীকে ইভিন কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে আগুনের জন্য ‘অপরাধী উপাদান’ কে দায়ী করা একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইঙ্গিত দিয়েছে, সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সঙ্গে ইভিন কারাগারে অগ্নিকাণ্ড ও গোলাগুলি-বিস্ফোরণের ঘটনার সংশ্লিষ্টতা নেই।

বিবিসি জানায়, ১৫০০তাসভির নামে ইরানের সরকারবিরোধী পর্যবেক্ষক একটি গ্রুপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ইভিন কারাগারে অগ্নিকাণ্ড ও গোলাগুলির একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ওই ভিডিওতে ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ চেয়ে দেয়া স্লোগান কারাগারের বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছে। মূলত এই স্লোগানটি ইরানে সরকারবিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলনের অন্যতম প্রধান স্লোগান।

বিবিসি তথ্য অনুসারে, অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে কারাগারের বাইরে থেকে গুলি করতে দেখা যাচ্ছে এবং তারপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

এছাড়া সরকারের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ইরানি মিডিয়া রিপোর্ট করেছে, আর্থিক এবং অপরাধমূলক ঘটনায় আটককৃত বন্দিদের মধ্যে বিরোধের কারণে কারাগারে দাঙ্গা শুরু হয় এবং এ ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক বন্দি জড়িত নয়। এতে আরও বলা হয়, কারাগারে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় আটজন আহত হয়েছেন।

এদিকে কারাগারের ভেতর থেকে কথা বলার সময় তেহরানের গভর্নর রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, কারাগারে অবস্থানরত ছোট অপরাধীদের একটি অংশের কারণে দাঙ্গাটি সৃষ্টি হয় এবং পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ শান্ত।

কিছু বন্দির পরিবার বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা তাদের আত্মীয়দের সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এর আগে সাধারণত তারা সহজেই বন্দিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন। আর তাই কারাগারের চারপাশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

এছাড়া কারাগারের দিকে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন