২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার শুনানি সোমবার
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দ্রুত শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন করে দিলেন প্রধান বিচারপতি। হাইকোর্টের কার্যতালিকায় উঠেছে, মামলার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিল। আগামীকাল সোমবার (৩১ অক্টোবর) শুনানির জন্যে দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
গতকাল শনিবার (২৯ অক্টোবর) এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল, জেল আপিল শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি।
গেলো আগস্ট মাসে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল, জেল আপিল দ্রুত শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
২১ আগস্টের ওই ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয় আরও ১১ আসামিকে।
বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, হুজির সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা শওকত ওসমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, মো. জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হানিফ।
পরিকল্পনা ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০২-১২০খ-৩৪ ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তারেক রহমান, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু ও মুফতি আব্দুল হাই।
তাদেরকে দণ্ডবিধির ৩০২-১২০খ-৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এ ছাড়াও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহুদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, আরেক সাবেক উপকমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এ মামলার আরও একটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাটি চালানো হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তবে হামলায় আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।