আর্কাইভ থেকে রোগব্যাধি

বেজির কামড়ে আতঙ্কে মানুষ

হঠাৎ করেই সিরাজগঞ্জে বেড়ে গেছে বেজির উপদ্রব। গত ২০ দিনে সিরাজগঞ্জে অন্তত ১২০ জনের অধিক ব্যাক্তি বেজির কামড়ের শিকার হয়েছেন। হঠাৎ করে বেজির এমন আচরনে অবাক স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবী ভোরে থেকে সন্ধ্যা ও রাতের কিছু সময় পর্যন্ত বেজি কামড় দিচ্ছে। এদিকে এ বিষয়ে চিকিৎসার বলছেন বেজির কারনে শরীরে নানা ধরনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বেজির কামড়ের ফলে জলাতঙ্ক (Rabies) রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বেজিকে বলা উপকারী প্রাণী। বেজি বিষধর সাপ মারে ও সাপের ডিম খায়। আবার ধান ক্ষেতের ইঁদুর খায়। অথচ এই বেজি আবার এখন মানুষের সমস্যার কারন হয়ে দাড়িয়েছে। বেজি কম বেশি মানুষকে কামড়ালেও বর্তমানে তার মাত্রা বেড় গেছে। সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ সদর ও এর আসেপাশের উপজেলায় বেজির দ্বারা মানুষকে কামড়ানোর ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বেজিরা দিনের বেলা খাবার সংগ্রহ করে আর রাতে তাদের গর্তে থাকতে পছন্দ করে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে বেজি সকালে ও সন্ধার দিকে মানুষকে বেশি আক্রমণ করছে।

সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার গোশালা, মালশাপাড়া, এস,এস রোড, ধানবান্ধী এলাকা সহ সদর উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে বেজির কামড়ের শিকার হচ্ছে সাধারন মানুষ। হঠাৎ করে বেজির কামড়ের মাত্র বেড়ে যাবার কারনে অনেকই দিনে ও রাতে পথ চলতে ভয় পাচ্ছে। বিশেষ করে পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে চিন্তায় পড়েছে অভিভাবকেরা।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার গোশালা মহল্লায় গত ১৫ দিনে প্রায় ১০ জন বেজির কামড়ের শিকার হয়েছেন।

বেজির কামড়ের শিকার হওয়া গোশালা এলাকার রাজিব জানান, ‘আমি সন্ধার পর বাড়ি ফেরার পথে রাস্থায় হঠাৎ করে বেজি দৌড়ে এসে কামড়িয়ে চলে যায়। পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে আমার। একই এলাকায় এক গৃহিনী দুপরে বাড়ির বারান্দায় রান্নার জন্য সবজি কাটার সময় বেজি তার হাতে কামড় দেয়। অন্যদিকে মাসাপাড়া এলাকায় রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক শ্রমিক বেজির আক্রমণের শিকার হয়।’

সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়সাল আহম্মদ জানান, আগেও বেজির কামড়ের রুগী আসতো তবে গত এক মাস ধরে বেজি কামড়ের রুগী বেশি আসছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ জন বেজি কামড়ের রুগী হাসপাতালে আসছে চিকিৎসা নিতে। এসব আক্রন্ত রুগীর মধ্যে গ্রাম অঞ্চলের মানুষই বেশি।

তিনি আরো জানান, বেজি কামড়ানো রুগীরা এটাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া দরকার। তা না হলে জলাতঙ্ক থেকে শুরু করে শরীর বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রন্ত হতে পারে।

এ বিষয়ে জেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: গৌরাংগ কুমার তালুকদার জানান, বেজি আসলে একটি বন্য প্রানি। হঠাৎ করে বেজির এমন আচারনের কারন সম্পের্কে জানতে বন বিভাগের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে বেজি কামড়ের পর হাসাপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে জোর দেন তিনি। তিনি বলেন পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে। প্রযোজনে আরো ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন