আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

অভাবের তাড়নায় দুইদিনের শিশু বিক্রি

রাজশাহীতে অভাবের তাড়নায় নবজাতক বিক্রির ৮দিন পর উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। বাড়িতে দুটি সন্তান থাকার পর পুনরায় আরো একটি কন্যা সন্তান হওয়ায় দুইদিনের শিশুকে ক্লিনিকেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন বাবা।

আজ রোববার (২০নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর রাজপাড়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট এলাকা থেকে নবজাতক উদ্ধার ও শিশুর বাবা ও ক্রেতা নারীকে আটক করে। তবে শিশুটি পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে ক্রেতাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

শিশুর বাবার নাম রহিদুল (৪০)। তার বাড়ি নগরীর সিলিন্দা এলাকায়। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। গেলো ১২ নভেম্বর তিনি তার নবজাতক কন্যাকে ২৪ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। গেলো শুক্রবার স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে রাজপাড়া থানা পুলিশ।

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, ঘটনাটি জানার পর নবজাতকের বাবা রহিদুলকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। পরে তার দেয়া তথ্য মতে গোদাগাড়ীর কাকনহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। সাথে আটক করা হয়েছে ক্রেতা শাহানুর নামে নারীকে। শাহানুর কাকনহাট এলাকার বাসিন্দা।

তিনি জানান, রহিদুলের আরও এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। তাদের বয়স ১০-১২ বছর। গেলো ১০ নভেম্বর রহিদুলের স্ত্রী জান্নাতুল খাতুন নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার কেয়ার নার্সিং হোম নামের একটি বেসরকারী ক্লিনিকে আরও একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। পরে সেখান থেকেই কাকনহাট এলাকার শাহানুরের কাছে বিক্রি করে দেন রহিদুল। এর পর থেকেই জান্নাতুলের স্ত্রী বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করছিলেন। তা দেখে স্থানীয় এক ব্যক্তি বিষয়টি থানায় জানান। এরপরই প্রথমে রহিদুল ও পরে শাহানুরকে থানায় নিয়ে আসা হয়।

নবজাতকের বাবা রহিদুল জানান, অভাবের তাড়নায় তিনি বাচ্চা বিক্রি করে দেন। এতে তিনি ২৪ হাজার টাকা পান। আর শাহানুর জানিয়েছেন, তাঁর বোনের কোন সন্তান নেই। তাই বোনের জন্য তিনি বাচ্চাটি কেনেন। কিন্তু দত্তক নেয়ার মতো করে কোন কাগজপত্র করে না দেয়ায় তিনি বাচ্চাটি নিজের কাছে রাখেননি। তাঁর অন্য এক আত্মীয়কে বাচ্চাটি দিয়েছেন। ওই আত্মীয়ের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে। পরে বিকেলে বাচ্চাটি উদ্ধার করে রাজপাড়া থানা পুলিশের একটি দল।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন