আর্কাইভ থেকে এশিয়া

নীতি বদলে তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় ভারত

আফগানিস্তান ইস্যুতে নিজেদের দীর্ঘদিনের নীতি ভেঙে নতুন এক অধ্যায়ের শুরু করেছে ভারত। এবারই প্রথম আফগান সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে নয়াদিল্লি। তবে পাকিস্তান বা ইরানপন্থি নয়, তালেবানের জাতীয়তাবাদী নেতাদের সঙ্গেই আলোচনা করছে তারা।

মঙ্গলবার একথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রায় ২০ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে গেল বছর ফেব্রুয়ারিতে তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর থেকে ক্রমশ আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র উপস্থিতিতে চুক্তি স্বাক্ষর করা তালেবান নেতা মুল্লাহ বরাদরের সঙ্গেই আলোচনা শুরু করেছে ভারত।

নতুন উদ্যোগের বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেছেন, আগের নীতির অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে। অনেকে মনে করছে, তালেবান নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া ভালো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, তালেবানের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারাই। তবে তারা স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তান ও ইরানের মদত পাওয়া তালেবান নেতাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হচ্ছে না। সশস্ত্র সংগঠনগুলোর মদতপুষ্ট হাক্কানি বা কোয়েটা সুরার সঙ্গেও কোনো প্রকার আলোচনায় যেতে রাজি নয় ভারত।

আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি, সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইসহ আফগান নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার সমান্তরালে তালেবানদের সঙ্গেও দিল্লি আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে স্মরণ করে দিয়েছে ওই কর্মকর্তা।

জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনায় না বসার নিজেদের দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে প্রথম তালেবানদের আলোচনা শুরু করেছে নয়াদিল্লি।

মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানে সংকট তৈরি হতে পারে। এজন্য ভারত চায়, তালেবানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কাবুলে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের পথ উন্মুক্ত রাখতে। এভাবেই শুধু আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিশ্চিত হতে পারে বলে মনে করে দেশটি।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠি আল কায়দা। হামলায় নিহত হয় প্রায় তিন হাজার মানুষ। এরপরই আল কায়দার পৃষ্ঠপোষক তালেবান গোষ্ঠীকে দমনে আফগানিস্তানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটো।

অভিযানে দেশটির তৎকালীন তালেবান সরকারের পতন হলেও তাদের নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের এই যুদ্ধে দুই হাজারের বেশি মার্কিন সেনা এবং এক লাখের বেশি আফগান নাগরিক নিহত হয়েছে। মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘতম এই যুদ্ধের পেছনে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ছয় ট্রিলিয়ন ডলার।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন