আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

জামিন জালিয়াতির অভিযোগে দুই আইনজীবীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মামলায় ভুয়া আগাম জামিন আদেশ তৈরির ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে ৪ জনের নাম উঠে এসেছে।

এরা হলেন, ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রাজু আহমেদ রাজীব, বগুড়া আদালতের আইনজীবী তানজীম আল মিসবাহ, ঢাকা জজ কোর্টের কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানা ও ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী সহকারী মো. সোহাগ। কারাগারে থাকা সোহাগ ইতোমধ্যেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হাইকোর্টে সিআইডির দাখিল করা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আজ বুধবার (৯ জুন) বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত দুই আইনজীবী ও কম্পিউটার অপারেটর মাসুদ রানাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৩ জুন হাইকোর্টে হাজির হতে বলেছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম মিতি।

এর আগে আসামিদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের জাল আদেশ দাখিল করে বগুড়ার আদালত থেকে জামিন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাইকোর্ট গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে যুবলীগের সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এই আদেশ বাস্তবায়ন করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়াতে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়। এরমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোটভাই মশিউল আলম বাদী হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি বগুড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় যুবলীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলামসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের জামিন নেওয়ার একটি আদেশনামা (জামিন আদেশ) তৈরি করা হয়। 

আদেশনামায় দেখানো হয়েছে যে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে আসামিদের ৬ সপ্তাহের জামিন দেওয়া হয়েছে। এই জামিন শেষে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ভুয়া আদেশের তথ্য সংশ্লিস্ট আদালতের নজরে আসে। এরপর এবিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানান। এরপর আদালত আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

শুভ মাহফুজ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন