অনলাইনে একাদশে ভর্তির আবেদন শুরু আজ
উচ্চমাধ্যমিকে (একাদশ শ্রেণি) অনলাইন ভর্তির প্রথম ধাপের আবেদন বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে। আর আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন ধাপে আবেদন গ্রহণ ও মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।
তালিকাভুক্তদের নির্ধারিত সময়ে ভর্তির জন্য ৩২৮ টাকা দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে ভর্তি, ক্লাস শুরু হবে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
এদিকে শুধু নামকরা কলেজের পেছনে না ছুটে এসএসসির নম্বর অনুযায়ী তালিকা পূরণের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা। বরাবরের মতো ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নেবে নটরডেম ও হলিক্রসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। আর বোর্ড বলছে, ভর্তিতে নির্ধারিত ফির বাইরে অর্থ আদায় করলে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
বিভিন্ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল শেষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় প্রায় ১৮ লাখ শিক্ষার্থী। প্রথম ধাপের আবেদন চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ৩১ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় ধাপে অনলাইনে আবেদন করতে হবে ৯ ও ১০ জানুয়ারি। এই ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে ১২ জানুয়ারি। তৃতীয় ধাপের আবেদন ১৬ জানুয়ারি ও ফলাফল প্রকাশ হবে ১৮ জানুয়ারি। ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারির মধ্যে প্রাপ্ত কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে ক্লাস।
ভর্তি নিয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সম্প্রতি সময় সংবাদকে বলেন, একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। তিন ধাপে অনলাইন আবেদন গ্রহণ ও মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে। তিন ধাপেও যদি কেউ ভর্তি থেকে বঞ্চিত থাকে তবে আরও একটি ধাপ বাড়ানো হবে। সারা দেশে পর্যাপ্ত শূন্য আসন আছে, তাই কেউ ভর্তি থেকে বঞ্চিত হবে না। এবার একজন ভর্তিচ্ছু ১৫০ টাকা ফি দিয়ে পছন্দ তালিকায় সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ নির্বাচন করতে পারবেন।
কলেজে ভর্তি নিয়ে উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম শুধু শহরকেন্দ্রিক নামকরা কলেজের নয় বরং এসএসসির প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে পছন্দ তালিকা পূরণের পরামর্শ দিয়েছেন।
এবারও একাদশ শ্রেণিতে সর্বোচ্চ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। নির্ধারিত ফি-এর বাইরে অর্থ আদায় করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড।
গত বছরের মতো এবার ফলাফলের ভিত্তিতেই কলেজ পাবেন ভর্তিচ্ছুরা। তবে নটরডেম কলেজ, হলিক্রস কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবারও অনলাইন পদ্ধতির বাইরে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি করবে।
জানা যায়, সারাদেশে ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে পাঠদান হয়। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে ৫৬৫টি। ডিপ্লোমা ইন কমার্স প্রতিষ্ঠান সাতটি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি) পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ১৮০০। কলেজ ও মাদরাসায় আসন আছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ২৪৯টি, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে আছে প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার। এ ছাড়া কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে প্রায় ৯ লাখ আসন রয়েছে। ফলে দেখা যাচ্ছে এ বছর পাস করা সব শিক্ষার্থী ভর্তির পরও আসন শূন্য থাকবে প্রায় ১৬ লাখ।
বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড থেকে জানা যায়, দেশে সাড়ে ১১ হাজার প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা হলেও আড়াইশ কলেজে ভর্তির আগ্রহ থাকে শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে প্রায় ২০০ কলেজ ও মাদরাসা এবং ৪৭টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, একটি গ্রাফিকস আর্ট ইনস্টিটিউট ও একটি গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ ছাড়া ৫১৫টি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থাকলেও হাতে গোনা ডজনখানেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী আকৃষ্ট করার ক্ষমতা রাখে। ডিপ্লোমা ইন কমার্সের সাত প্রতিষ্ঠান ও বিএমটি এবং ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানেও কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
এর বিপরীতে দেখা যায়, এবছর এসএসসি-সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া জিপিএ-৫ এর নিচে কিন্তু জিপিএ-৩ দশমিক ৫ এর ওপরে পেয়েছে এমন শিক্ষার্থী আছে আরও ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৮৬৯ জন। এসব শিক্ষার্থীও ভালোমানের প্রতিষ্ঠানের দিকে ছুটতে দেখা যায়। ফলে ভর্তি নিয়ে এক ধরনের তুমুল প্রতিযোগিতা তৈরি হয় প্রতিবছর। ভালো প্রতিষ্ঠানে সীমিত আসনের কারণে জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকে পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পায় না।