আর্কাইভ থেকে আফ্রিকা

তিউনিসিয়ায় কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীর তৈরী হচ্ছে

এবার ভূমধ্যসাগরের তলদেশের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় ভিন্নধর্মী এক উদ্যোগ নিয়েছে আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়া। দেশটির উপকূলজুড়ে কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীর তৈরি করছে নটর গ্র্যান্ড ব্লু অর্গানাইজেশন। মাছ ও অন্যান্য প্রাণীর বংশ বিস্তারের পাশাপাশি এই কৃত্রিম প্রাচীর প্রবালের সংখ্যাও বাড়াবে। কংক্রিট আর পাম গাছের ডাল দিয়ে কৃত্রিম এই প্রবাল প্রাচীর তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে ভীষণ আশাবাদী তিউনিসিয়ার সমুদ্র গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা।

দ্য আরব উইকলি জানায়, তিউনিসিয়ার জনপ্রিয় বিচ রিসোর্ট মোনাস্তির দ্বীপে কংক্রিটের ব্লকে, পাম গাছের ডাল ঢুকিয়ে সাগরে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। সাগরতলের ইকো সিস্টেমের উন্নয়ন ঘটাতেই নটর গ্র্যান্ড ব্লু’র এই প্রয়াস। ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রবাল প্রাচীরকে রক্ষা করাই তাদের উদ্দেশ্য। কয়েক মাস ধরেই এই কার্যক্রম চলছে।

উত্তর আফ্রিকার দেশটির অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ এই প্রবাল প্রাচীর। তিউনিসিয়া উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে থাকা এই প্রবাল প্রাচীর দেখতে প্রতি বছর ভিড় করে লাখো পর্যটক। সাগরের জীব বৈচিত্র্যের জন্যও এই প্রবাল প্রাচীর গুরুত্বপূর্ণ। তবে কয়েক বছর ধরেই দূষণের কারণে কমছে প্রবাল কীট। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রবাল প্রাচীর। প্রবাল রক্ষায় তাই কৃত্রিম প্রাচীর তৈরি করছে দেশটি।

প্রবাল প্রাচীরের কারণে সেখানে আশ্রয় নেয় মাছসহ অন্যান্য প্রাণী। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো জলজ প্রাণীর বংশবৃদ্ধিতে এসব প্রবাল প্রাচীর বড় ভূমিকা রাখে। তিউনিসিয়ার সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছে, আমরা লক্ষ্য করেছি উপকূলীয় প্রবাল প্রাচীরগুলো ধ্বংস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছের পরিমাণও কমছে। তাই এসব প্রাণীর আশ্রয় নেওয়ার জন্য এই কৃত্রিম প্রবাল প্রাচীরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কংক্রিটের সঙ্গে পাম গাছের ডাল দেওয়ার কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছে, এতে করে পানির নিচে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ পাবে মাছ এবং অন্যান্য প্রাণী। তিউনিসিয়ায় মাছের প্রজনন বাড়াতে বহু বছর আগে থেকেই পাম গাছের ডাল ব্যবহার করা হয়। গবেষকরা বলছে, পামের ডাল পানিতে ফেলার পর প্রায় সব ধরণের জলজ প্রাণীই এতে আশ্রয় নেয়। যা অন্য কোনো গাছের ক্ষেত্রে হয় না। তাই এই প্রোজেক্টে শুধু পাম গাছের ডাল ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলও পাওয়া যাচ্ছে হাতে-নাতে।

সম্প্রতি তিউনিসিয়ার সমুদ্র উপকূলে দূষণের পরিমাণ বাড়ায় উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করে দেশটির সরকার। প্লাস্টিক, মানব বর্জ্য এবং কারখানার বিষাক্ত পদার্থ সাগরে মেশায় দূষণ বেড়েছে বলে জানানো হয়।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন