বাংলাদেশের অগ্রগতি বন্ধ হোক আমেরিকা তা চায় না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বন্ধ হোক সেটা আমেরিকার সরকার চায় না। তারা বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চায়। র্যাবের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা শিগগির উঠবে। বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশাবাদের কথা জানান।
গত শনি ও রোববার ঢাকা সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। রোববার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে ডোনাল্ড লু বলেন, র্যাবের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার (ডোনাল্ড লু) সঙ্গে আমাদের কয়েকজন মন্ত্রীর একান্তে মিটিং হয়েছে। আমার সঙ্গে তার আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সেখানে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। তাতে আমার যা মনে হয়েছে, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, বন্ধ হোক সেটা আমেরিকার সরকার চায় না। তারা বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চায়। তারা চায় এদেশের মানবাধিকার যেন আরও ওপরে থাকে। তারা চায় এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। কেউ যেন সহিংসতায় লিপ্ত না হয়। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে বলেছি, অতীতে আমরা কীভাবে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস এগুলো মোকাবিলা করেছি। তারা এটার প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন সুন্দরভাবে এসব বিষয় মোকাবিলা করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (মার্কিন প্রতিনিধি দল) বলেছেন, তোমরা যেভাবে যাচ্ছো একটা সঠিক পথে যাচ্ছো। আমরা মনে করি, হয়তো খুব শিগগির নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে। তোমরা যেভাবে চলছো এটা যেন চলমান থাকে, তোমাদের ল’ইয়ার ভালো ভূমিকা রাখছে। আমরা আশা করছি এটা খুব অচিরেই শেষ হবে। আমরা কাউকে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পক্ষে নই। ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে দেখে শুনেই দেবে বলে আভাস দিয়ে গেছেন আমাদের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলেও একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহার হয়। তবে সে প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। এই প্রক্রিয়ায় কতোগুলো ধাপ আছে সেগুলো পার হতে হয়। তারা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা যাদের দেয়া হয়, সেটা প্রত্যাহারের সময় কতগুলো ধাপ পার হতে হয়। সে প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। তবে তারা বলেছে, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে চলছে সেটা উত্তরণ হবে এবং নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার হবে। এটাই তাদের বক্তব্য ছিল।
তিনি বলেন, আমি বলেছি, আমরা সঠিক কাজ করছি। র্যাব ভালো কাজ করছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সেটা সবসময় বলবো। কাজেই তাদের চোখে যেটা পড়েছে সেটার জন্য তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এখন তারা বলছে আমরা যেভাবে আবেদন করেছি, সেটা সঠিক আছে। উনি আমাদের কোনো প্রেসার দিতে বা কিছু আরোপ করতে আসেননি। বরং বলেছে র্যাব ভালো করছে, আমরা সঠিক পথে আছি, আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। এভাবে চললে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবে। প্রয়োজনে আরও সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন তারা।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ৯০ দিন আগেই আমাদের সব ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে যায়। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এবং সরকারের সবকিছু তারা নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা মন্ত্রীরা শুধু অফিস ওয়ার্ক করি, তেমন করণীয় কিছু থাকে না। কাজেই আমি মনে করি আমাদের পুলিশ বাহিনীসহ যারা নির্বাচন কাজে সবসময় থাকে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে।
স্বরাষ্ট্রম মন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের প্রশংসা করেছেন যে, আমরা বিএনপিকে বিভিন্ন জনসভা করতে দিচ্ছি এজন্য। তবে সমাবেশের নামে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, রাস্তায় ব্যারিকেড- এসব বিষয় আমেরিকার সরকার সমর্থন করে না। আমরা যেভাবে এখন চলছি সেটার প্রশংসা করেছেন।