কুকুরের বন্ধ্যাত্ত্বকরণ কার্যক্রম শুরু করেছে ডিএসসিসি
বেওয়ারিশ কুকুরের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শুরু হওয়া বন্ধ্যাত্ত্বকরণ কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী শিগগিরই পেতে শুরু করবেন। বললেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারি) ওয়ারীর ফকিরচাঁন কমিউনিটি সেন্টারে ‘কুকুর বন্ধ্যাত্ত্বকরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র তিনি এসব বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজকের বন্ধ্যাত্ত্বকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি অঞ্চলেই আমাদের এই কার্যক্রম শুরু করব। অঞ্চল ৫ থেকে আমরা শুরু করছি। আমাদের অঞ্চল ১ থেকে ৪ এবং পরবর্তীতে আমাদের নতুন অঞ্চলেও এই কার্যক্রম চলবে। আমরা আশাবাদী, কিছুদিন পরেই ঢাকাবাসী এই কার্যক্রমের উপকার পাওয়া শুরু করবে এবং এই বেওয়ারিশ কুকুরের বিস্তৃতি রোধ হবে। ধীরে ধীরে সেটা কমে আসবে এবং ঢাকাবাসী অচিরেই বেওয়ারিশ কুকুরের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণের সুফল পাওয়া শুরু করবে।’
বেওয়ারিশ কুকুরের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘বড় বড় শহর বা উন্নত শহরগুলোতে বেওয়ারিশ কুকুর বা অন্যান্য প্রাণী যত্রতত্র চলাচল করতে পারে না। সেগুলো নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাদের নাগরিকরা সেগুলোর পরিচর্যা করেন, নিয়ন্ত্রণে রাখেন এবং সেভাবেই একটি সুন্দর শহর গড়ে ওঠে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে নজর না দেওয়ার কারণে ঢাকা শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, সে অনুযায়ী দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় পঞ্চাশ হাজারের ঊর্ধ্বে বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে। সুতরাং বেওয়ারিশ কুকুরের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে আমাদের একটি স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। সেজন্য, সারা বিশ্বের ন্যায় বেওয়ারিশ কুকুরের বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে আমরা বন্ধ্যাত্ত্বকরণ কার্যক্রম শুরু করছি।’
দীর্ঘদিন পরে করপোরেশন থেকে এই কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দীর্ঘদিন ধরে কোনও পশু চিকিৎসক ছিল না। প্রায় ২০ বছর পর আমরা পাঁচজন পশু চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছি। আমরা আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কার করছি।’
মেয়র শেখ তাপস অনুষ্ঠানে এ বছরের বর্ষা মৌসুমের আগেই নতুন করে ফকিরচাঁন সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের কাজ শুরু হবে বলে জানান।
এর আগে তিনি আরামবাগ হাই স্কুল ও কলেজ এবং গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
উদ্বোধনের দিনে মোট ১০টি কুকুরকে বন্ধ্যাত্ত্বকরণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকার কুকুরকে এই কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। প্রতিদিন ১০টি করে কুকুর বন্ধ্যাত্ত্বকরণ করা হবে।
বন্ধ্যাকৃত কুকুরগুলোকে চিহ্নিত করার সুবিধার্থে সেগুলোর কান ফুটো করে দেওয়া এবং সেগুলোর ঘাড়ে নীল (স্থায়ী রং) স্প্রে করে দেওয়া হবে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো উপস্থিত ছিলেন।