ইবিতে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষরের মূল্য ১০০ টাকা!
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির চূড়ান্ত ভর্তি শুরু হয়েছে। এতে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভর্তি ফরমে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সহকারী রেজিস্ট্রার শাহ্ মো. মিজানুর রহমান।
এ ঘটনায় রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় অফিসে তালা দেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এসময় অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ভিতরে আটকা পড়েন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।
ভর্তিচ্ছু ও নিয়মিত শিক্ষার্থীরা জানান, ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হল সংস্থাপন ফি বাবদ ৯১৫ টাকা ব্যাংকে রসিদের মাধ্যমে জমা নিয়েছে। এর বাইরে ভর্তি ফরমে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে শহীদ জিয়াউর রহমান হলে গেলে কর্মকর্তা মিজান ১০০ টাকা করে দাবি করেন। তবে সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সাথে যাওয়া ভর্তিচ্ছুদের কাছে টাকা গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে।
পরে অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞেস করা হলে প্রথমিকভাবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। কিন্তু ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেন ওই কর্মকর্তা। এসময় তিনি হলের চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারী শোভনকে দেয়ার জন্য তিনি এ বাড়তি টাকা নিয়েছেন বলে জানান। তবে শোভন বিষয়টি অস্বীকার করেন।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ বলেন, ভর্তি ফরমে প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিতে গেলে হলের বেতনহীন কর্মচারীর নামে হলের রেজিস্ট্রার বাড়তি ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন। আমার সামনেই আরো কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ইব্রাহীম বলেন, এক শিক্ষার্থীর কাছে খুচরা টাকা না থাকলে একহাজার টাকা রেখে দেন। কিন্তু বিষয়টা জানাজানি হলে তিনি ১০০ টাকা রেখে বাকি ৯০০ টাকা ফেরত দেন।
শাহ্ মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে একজন কর্মচারী কাজ করে। তার নাম শোভন। সে কোন বেতন পায় না। তার জন্যই আমরা এই টাকাটা নিচ্ছি।
কর্মচারী শোভন বলেন, এভাবে টাকা নেওয়া হয়ই না। নেওয়ার কোনো নিয়মও নেই। হয়তো ২০ জন ভর্তি হলে দুই একজন থেকে নেওয়া হয়। এর থেকে আমাকে কিছু দেন, উনিও কিছু নেন। অনেকসময় ভাড়া না থাকলে, ভাই বিশটা টাকা দেনতো, যাবো আসবো, স্বাক্ষর নিবো বলে দশ-বিশ টাকা নেই।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বলেন, বিষয়টি জেনেছি। রসিদ বিহীন টাকা নেওয়া অন্যায়। আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।