আর্কাইভ থেকে ফুটবল

ভোর হলেই মারাকানায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণ

মঞ্চ প্রস্তুত, প্রস্তুত দুই শিবির। অপেক্ষা শুধু মহারণ মঞ্চায়নের। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার চিরবৈরিতার আরও এক সোনালী অধ্যায়ের সাক্ষী হতে তৈরি মারাকানা। ঘরের মাঠে আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ সেলেসাওদের।
 
আর ২৮ বছরের আক্ষেপ ঘুচানোর হাতছানি আলবিসেলেস্তেদের। সঙ্গে আকাশী নীল জার্সিতে প্রথম কোনো ট্রফি জয়ের সুযোগ লিওনেল মেসির। সাম্প্রতিক ফর্মে স্বাগতিকদের আধিপত্য থাকলেও কোপার ফাইনালের মুখোমুখি পরিসংখ্যানে এগিয়ে আলবিসেলেস্তেরা। ঐতিহাসিক মারাকানায় সকাল ৬ টায় শুরু হবে এই মহারণ।

ঐতিহাসিক মঞ্চে ইতিহাস ডাকছে আর্জেন্টিনাকে। লাতিন শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার তো বটেই, ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর হাতছানি আলবিসেলেস্তদের সামনে। আকাশী নীল জার্সিতে একটা ট্রফি ছুঁয়ে দেখার হাহাকার দূর করার আরও একটা সুযোগ লিওনেল মেসির। চার বিশ্বকাপ আর আগের ৫ কোপা আমেরিকায় যা পারেননি এলএমটেন।

এ যাত্রায় সফল হলে উরুগুয়ের সমান সর্বোচ্চ ১৫ কোপা জয়ের কৃতিত্বে ভাগ বসাবে দিয়েগো মারাদোনার দেশ। মেসিকে নিয়ে সহানুভূতি বাড়ছে ব্রাজিলেও। তবে করোনার কারণে ফাইনালেও থাকছেনা স্টেডিয়ামে দর্শক প্রবেশের অনুমতি।

থিয়াগো সিলভা বলেন, 'মেসির প্রতি সহানূভূতি থাকতেই পারে, তাই বলে ব্রাজিলের বিপক্ষেও আমাদের কিছু মানুষ কিভাবে আর্জেন্টিনার জন্য গলা ফাটায়, তা আমার বুঝে আসেনা। আর কোন সন্দেহ নেই, ওদের দলে মেসিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। যে ব্যবধান গড়ে দিতে পারে।'

আর আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে ওঠানোর নায়ক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ জানেন প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা। তিনি বলেন, 'যে কোন আর্জেন্টাইনের জন্য, ব্রাজিলের মাঠ থেকে শিরোপা জয়ের চেয়ে আর কোন ভালো দৃশ্য হতে পারেনা। তবে এটাও জানি, নেইমারের নেতৃত্বে ওদের আক্রমণভাগ কতটা ভয়ঙ্কর।'

ব্রাজিলের চ্যালেঞ্চটা মর্যাদা রক্ষার। ব্যাট টু ব্যাক শিরোপা জিতে সংখ্যাটা দশে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ সেলেসাওদের। পরিসংখ্যানও স্বাগতিকদের পক্ষে। ঘরের মাঠে আঞ্চলিক আসরের পাঁচ ফাইনাল খেলে প্রতিবারই শিরোপা উৎসব করেছে ব্রাজিল।

দুরন্ত ফর্মও আভাস দিচ্ছে জমাট লড়াইয়ের। ব্রাজিলের মতো টুর্নামেন্ট জুড়ে অপ্রতিরোধ্য আর্জেন্টিনাও। ৬ ম্যাচে সমান ৫ জয় আর এক ড্র দুই দলের। তবে ফাইনালে পা রাখতে শেষ চারে ঘাম ঝড়াতে হয়েছে আলেবিসেলেস্তেকে। কোচ লিওনেল স্কালোনির আস্থার নাম লিওনেল মেসি। আর তিতের ভরসা নেইমারে। প্রতিপক্ষ বধের কৌশল নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কৌশলি দুই কোচ।

ব্রাজিল কোচ তিতে বলেন, 'আপনি যদি আমাকে জানান, নেইমারকে সামলাতে আর্জেন্টিনার পরিকল্পনা কি? তাহলে মেসিকে আটকানোর কৌশল আমি আপনাকে বলবো।'

আর আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনির দাবি, মেসির শ্রেষ্ঠত্ব বোঝাতে শিরোপা দরকার নেই। তিনি বলেন, 'চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে ম্যাচ। চূড়ান্ত লক্ষ্য পূরণে সর্বোচ্চ দিতে সবাই প্রস্তুত। ফলাফল যাই হোক। মেসি ইতিহাসের সেরা ফুটবলারই থাকবে।' 

শতবর্ষেরও বেশি পুরনো এই বৈরিতায় এগিয়ে ব্রাজিল। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানেও নেইমারদের আধিপত্য। ১৯৯৮ সালের পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরতে পারেনি আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টে শেষ ৫ দেখায় একবারও জিততে পারেনি আকাশী নীলরা। যদিও ১৯৯৩ সালে আর্জেন্টিনার শেষ শিরোপার মঞ্চ ছিলো এই মারাকানাই।

ইনজুরিমুক্ত স্কোয়াড স্বস্তি দিচ্ছে লিনেল স্কালোনিকে। নক আউটের দুর্দান্ত ফর্ম, ফাইনালের একাদশে সার্জিও আগুয়েরো থেকে এগিয়ে রাখছেন লতারো মার্তিনেজকে। 

শিরোপা লড়াইয়ের আগে ব্রাজিলের অপ্রাপ্তি বলতে শুধু গ্যাব্রিয়েল জেসুস। লাল কার্ড দেখে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ায় তাকে ছাড়াই ছক কষতে হচ্ছে তিতেকে। গোলবারের নিচে আরও এক ম্যাচে দেখা যেতে পারে এদারসনকে। 

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন