আর্কাইভ থেকে ফুটবল

ইউরো ফাইনাল: ইংল্যান্ডের প্রথম নাকি ইতালির দ্বিতীয়?

আজ রাতে নির্ধারণ হবে ইউরো চ্যাম্পিয়ন। ইংল্যান্ডের প্রথম শিরোপা নাকি ইতালির দ্বিতীয়? ফাইনালে সেরা একাদশই পাবেন দুই কোচ গ্যারেথ সাউথগেট ও রর্বার্তো মানচিনি। রাত ১টায় লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই হাইভোল্টেজ ম্যাচটি।
 
রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের বয়স তখন ৪০। মুর-চার্লটনরা ওয়েম্বলিতে তার হাত থেকেই নিয়েছিলেন বিশ্ব সেরার ট্রফি। দিন গড়িয়ে রাণীর বয়স এখন ৯৫, এর মাঝে ব্রিটেন পেয়েছে ১০ নতুন প্রধানমন্ত্রী। জুলে রিমে ট্রফির নামটাও বদলে গেছে।

যে দলটার কথা বলতে চলেছি, ৫৫ বছর আগে তারা ফুটবলের প্রাপ্তির চূড়ায় উঠেছিল। আবার সেটিই কি না শেষ! বিশ্বকাপ জয়ে দুই বছর পর ইউরোর সেমিফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ। এরপর বড় কোন আসরের ফাইনাল দূরে থাক, সেমির দেখা পেতেই কেটে গেছে ২৮ বছর। তবে ২৮ বছর পর ১৯৯৬-এ ওয়েম্বলিতেও মেলেনি ফাইনালের টিকিট। সবশেষ ২০১৯ উয়েফা ন্যাশন্স লিগ। সেবারও শেষ চারে স্বপ্নভঙ্গ।

সেই ইংল্যান্ড সব সময়ই তরুণ। বরং এখন আরও পরিণত, তারকা সমৃদ্ধ। হ্যারি কেইন, রাহিম র্স্টালিংদের ঔজ্বল্য ইংলিশদের শিরোপা স্বপ্নে বিভোর করছে। দলটির খেলোয়াড়দের গড় বয়স যেখানে মাত্র ২৫। বিপরীতে ইতালির রক্ষণভাগের মূল স্তম্ভ, দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত জুটি ৩৪ বছরের বোনুচ্চি যেমন আছেন, আছেন ৩৬ বছর বয়সী কিয়েলিনি।   

ফাইনালে ফিট দলই পাচ্ছেন গ্যারেথ সাউথগেট। শুধু মিডফিল্ডার ফিল ফোডেনকে নিয়ে আছে শঙ্কা। তবে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ম্যাচের চেয়ে বেশি কথা হয়েছে সেমির নানা কাণ্ড নিয়ে। কারণ ইংলিশ সমর্থকদের নানা কাণ্ডে বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হচ্ছে ইংল্যান্ড ফুটবল ফেডারেশনকে। তাই ফাইনালের আগে ইংলিশ কোচ নিজ দেশের দর্শকদের কাছে অনুরোধ করেছেন, যাতে প্রতিপক্ষকে নিয়ে কোনো খারাপ মন্তব্য না করা হয়। 

গ্যারেথ সাউথগেট বলেন, 'দর্শকদের অনুরোধ করব, গ্যালারিতে থেকে আমাদের সমর্থন দিবেন, এটা আমাদের প্রয়োজন। তবে, প্রতিপক্ষকে নিয়ে কোনো খারাপ মন্তব্য নয়।'

চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে নিয়ে নতুন করে আর কি-ই বা বলার আছে। এবারের ইউরোতে দলটি ধাপে ধাপে যত এগিয়েছে, অপরাজেয় ম্যাচের সংখ্যা বাড়িয়ে নিয়েছে। ফাইনালটা জিতলে তা দাঁড়াবে ৩৪-এ।

লিডারবোর্ডে ইনসিনিয়ে, ইমোবিলে, কিয়েজা, পেসিনা, লোকাতেলি- সবার দুটি করে গোল বলছে, টিম গেমে ইউরোতে আধিপত্য বজায় রেখেছে আজ্জুরিরা। ফাইনালে শুধু লেফট ব্যাক স্পিনাজ্জোলাকে পাচ্ছেন না রবার্তো মানচিনি।

ইতালি কোচের কাছে এটাই জীবনের সবথেকে বড় মুহুর্ত। ফাইনালকে সামনে রেখে মানচিনি বলেন, 'আমার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ মূহূর্ত অপেক্ষা করছে। সুযোগ এসেছে সাফল্য পাবার। খেলোয়াড়ি জীবনেও এমন অভিজ্ঞতা আমার আসেনি।'

বিশ্বকাপে বারবার সাফল্য এলেও ১৯৬৮'র পর আর ইউরোতে ট্রফি হাতে তোলা হয়নি ইতালির। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে থ্রি লায়ন্সের সাথে দুই দেখায় শতভাগ জয় আজ্জুরিদের। সব মিলে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ২৭ ম্যাচে। সেখানেও ১০ জয় নিয়ে ইতালির আধিপত্য। আর ইংল্যান্ড হেসেছে ৮টিতে।

রাণী এলিজাবেথ স্বাগতিক দলকে আহবান জানিয়েছেন ৬৬'র স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে। সেবার শিরোপাটা বিশ্বকাপের হলেও হলেও এবার ইউরো। তবুও তো শিরোপা! গত ক'দিন ধরে চলা জল্পনার অবসান হবে আর কয়েক ঘণ্টা পর। ফুটবল ঘরে ফিরবে, না কি রোমে? উত্তর জানা যাবে ফাইনালের মহারণে।

এএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন