মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা মিয়ানমারের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেনা অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুই বছর পর দেশটির সামরিক শাসকদের ওপর চাপ প্রয়োগে এ নিষেধাজ্ঞা। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া মিয়ানমারের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের দুই বছর পূর্তির সময় নতুন করে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এলো। এ নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কিছু সদস্য এবং দেশটির জ্বালানি কর্মকর্তাদের আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের বরাতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন, খনি প্রতিষ্ঠান, জ্বালানি বিষয়ক কর্মকর্তা এবং সাবেক ও বর্তমান কিছু সেনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ট্রেজারি বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (এমওজিই) কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলো। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য মিয়ানমারে ক্ষমতা দখলের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে জান্তা সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। সেনা বাহিনীর সঙ্গে সেনা বিরোধীদের লড়াই এবং তাদের ওপর সেনা বাহিনীর রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়ন দেখে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনরায় আরোপ হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অনেক দিন ধরেই এমওজিই-র উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এ বছরের অগাস্টে দেশটির জান্তা সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। স্থানীয় সময় গেলো শুক্রবার তারা এ ঘোষণা দেয়। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে মানতে হবে কঠোর কিছু শর্ত। এ ছাড়া রাজনীতিতে বৃহৎ আকারে সেনাসদস্যদের অন্তর্ভুক্তি তো আছেই। ফলে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ সেনা বাহিনীর হাতেই থাকে। এতে বিরোধীরা সবসময় কোণঠাসা হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকার উৎখাত করার সময় নোবেলজয়ী সুচি গ্রেপ্তার হন। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও, দেশটির সিংহভাগ জনগণ তা মেনে নেয়নি।
ক্ষমতা দখলের পর তীব্র বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এখনও কিছুদিন পরপরই বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর সদস্যদের লড়াইয়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে।