সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পদ ফিরে পেলেন দৈনিক সমকালের সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার আসামি হালিমুল হক মিরু। মামলার বিচার শেষ হওয়ার আগে প্রধান আসামিকে আওয়ামী লীগের সদস্য পদ দেওয়ায় ন্যায় বিচার নিয়ে হতাশ শিমুলের স্ত্রী ও স্থানীয় সাংবাদিকরা।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের অনুমোদিত কমিটিতে বির্তকিত মীরুর নাম দেখা যায়।
হত্যাকান্ডের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সব প্রতিবন্ধকতা দূর করে অবিলম্বে এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানান তারা।
সাময়িক বরখাস্তের পর আবারো আওয়ামী লীগের পদ ফিরে পেয়েছেন সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু। তাকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল। ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরু ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে মিরুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২ বছর সাড়ে ৯ মাস তিনি কারাভোগ করেন। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহীর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। গ্রেপ্তারের পরপরই দল থেকে মিরুকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। মেয়র পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এদিকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া বিলম্ব হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া ছয় বছর ধরে ঝুলছে। এরই মধ্যে জেলা কমিটিতে পদ পাওয়ায় নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহারসহ তার স্বজনরা উদ্বেগ জানিয়েছেন।
নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহার বলেন, হত্যাকাণ্ডের ছয় বছরে বিচার না পেয়ে আমরা হতাশ। মিরুসহ আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে মামলায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। আবার প্রধান আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছেন। এতে প্রভাব আরও বাড়বে।
অভিযুক্ত বহিস্কৃত মেয়র হালিমুল হক মিরু বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্রমূলক সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসাসি করা হয়েছে। আদালত এখন পর্যন্ত আমাকে দোষী সাব্যস্ত করেননি। তাই আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে পদ পেতেই পারি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, সাংবাদিক শিমুল হত্যাকাণ্ডের মামলায় মিরু আসামি হলেও বিচার প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি বা তিনি দোষী প্রমাণিত হননি। ছয় বছর আগে তাকে কেন্দ্র থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত না হলে তিনি পদ পাবেন। তাই কার্য নির্বাহী কমিটির খসরা তালিকায় তাকে সদস্য করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। তবে বিচারে অভিযুক্ত হলে তাকে অবশ্যই বাদ দেওয়া হবে।