এবার দেশের বিশিষ্টজনরা পরীমনির পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই নায়িকার পক্ষে দাবিও তুলেছেন তারা। এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পরীমনি এমন একটি অপরাধী চক্রের অপচেষ্টার শিকার যারা তাদের অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনের পথটি খোলা রাখতে চান’।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) বিকালে ‘নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি’র পক্ষে মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে পরীমনিসহ কয়েকজন নারীকে গ্রেপ্তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি হয়রানি ও অপপ্রচার বন্ধ করে ন্যায়বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিদাতারা হলেন- ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, মহিলা পরিষদ সভাপিত ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. জেড আই খান পান্না, অ্যাডভোকেট এসএমএ সবুর, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, বাসুদেব ধর, সোহরাব হাসান, ডাকসুর সাবেক জিএস মাহবুব জামান, অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, অধ্যাপক এমএম আকাশ, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, ডা. শাহিদা চৌধুরী, গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক, সঞ্জীব দ্রং, জাতীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রেখা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, লিগ্যালএইড সম্পাদক সাহানা কবির, অর্থ-সম্পাদক দিল আফরোজ বেগম, সংগঠন সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম, প্রশিক্ষণ-গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ প্রমুখ।
তাদের পক্ষে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়ে ঘরে মাদক রাখা, বাড়িতে পার্টি দেওয়া ও অন্যান্য অভিযোগে অভিনেত্রী পরীমনিসহ কয়েকজন নারীকে গ্রেফতার করেছে। অভিনেত্রী ও নারীদের গ্রেফতারের পর কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবে সংবাদ প্রচার ও শব্দ প্রয়োগ করা হয়- যাতে নারীর আত্মমর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। এ ধরনের সংবাদ প্রচার নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। এতে অপরাধ প্রমাণের পূর্বে ভিকটিম ব্লেমিং না করার নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে’।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়, অনাচার এবং নারীবিদ্বেষী পুরুষতান্ত্রিকতার বিস্তার যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে। অভিযুক্ত নারীদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ-সংশ্লিষ্টতার সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে আদালতে তাদের বিচার হবে। এ ক্ষেত্রে কারো কিছু বলার নেই। কিন্তু তারা যেন কারো কোনো প্রতিহিংসার শিকার হয়ে হয়রানি না হন। আদালত কর্তৃক অপরাধ প্রমাণের আগে উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা সমীচীন নয়। সংবিধানে বর্ণিত আইনের আশ্রয়লাভের সুযোগের সমতাও থাকতে হবে’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়- ‘অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করা, এটা টিকিয়ে রাখার জন্য অপরাধীচক্র তৈরির যে অপচেষ্টা তারই শিকার পরীমনি। নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি সুশাসন নিশ্চিতকরণসহ এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ঘটনার মূল কারিগরদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছে’।
এমএম/